মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীর বাড়িতে হামলা-লুটপাটের অভিযোগ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় মামলা তুলে না নেওয়ায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বাদীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকালে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামের সাবেক মেম্বার মতিউর রহমান মাতুব্বর ও তার ভাই হায়াত আলী মাতুব্বরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একটি বরফকল ও চারটি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। হামলার সময় ঘরে থাকা ফ্রিজ, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মালামাল লুটের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মতিউর রহমান মাতুব্বর বলেন, ‘২০২২ সালের জানুয়ারিতে আমার বাড়িতে হামলা চালায় মুক্ত মেম্বাররা। ওই ঘটনায় মুক্ত মেম্বারসহ তার চার ভাই ও তাদের দলের লোকজনের নামে মামলাকরি। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। এই মামলা তুলে নিতে আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে বিনোকদিয়ায় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। কাজী কামরুজ্জামানের বাড়ির সামনে গেলে মুক্ত মেম্বার, শাহ, আলম, সজীব ও মাহমুদসহ ১০-১২ জন আমার পথ আটকে মামলা তুলে নিদে হুমকি দেন। এ সময় শাহ আলম হেলমেট দিয়ে আমাকে মারতে থাকে। চিৎকার শুনে পাশের বাড়ির মমতাজ নামে এক ভ্যানচালক এসে উদ্ধার করেন। এর কিছুক্ষণ পর শাহ আলমের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লোক এসে আমার বাড়ি ও আমার ভাইয়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় আমার স্ত্রী ও ভাবিকে মারধর করে তারা।’

হায়াত আলী মাতুব্বরের মেয়ে আমেনা আক্তার বলেন, ‘২০-২২ জন লোক এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় শাহ আলম, মুক্ত ও সজীব হামলা করে আর বলতে থাকে, সোমবারের মধ্যে মামলা তুলে না নিলে তোদেরকে মেরে ফেলবো। এ সময় দরজার ফাঁক দিয়ে আমি ওদের কর্মকাণ্ড ভিডিও করি।’

হায়াত মাতুব্বর বলেন, ‘আমার বাড়ির ওপর একটি বরফকল কারখানা রয়েছে। ওই কলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বর্তমান ইউপি সদস্য মুক্তসহ তার লোকজন। এছাড়া বসতঘরেও হামলা চালিয়ে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। বাড়িতে থাকা নারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এদিকে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে মুক্ত মেম্বার বলেন, ‘আমরা কোনও হামলা চালাইনি। মতি মেম্বার আমার ভাইকে মারধর করে তার চোখ নষ্ট করে দিয়েছে।’

ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওটা আগের ভিডিও।’

সালথা থানার এসআই আওলাদ হোসেন বলেন, ‘মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলার হাজিরা দিয়ে শাহ আলম ও মুক্ত মেম্বারসহ কয়েক জন আসামি বাড়িতে ফেরার পথে মতির সঙ্গে দেখা হলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে শাহ আলম ও মুক্ত মেম্বার তার দলবল নিয়ে মতি ও তার ভাই হায়াত আলী মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষতিগ্রস্তরা এজাহার দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’