বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষক বহিষ্কার

শরীয়তপুরের ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক শ্রী রথি কান্তের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাংবাদিকরা ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার। এই ঘটনায় ডামুড্যা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সাংবাদিকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রথি কান্ত মিস্ত্রী ওই বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা ও স্কাউটের সহকারী শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) স্কাউটদের সাপ্তাহিক মিটিং ছিল। কোনও কারণ ছাড়াই ওই শিক্ষক মিটিং বাতিল করে দেন। পরে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে ওই শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যৌন নির্যাতন করেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে জানালে তিনি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় দুই সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান, একজন শিক্ষক পিতার সমান। সেই শিক্ষকই যদি এমন হয় তাহলে সেই বিদ্যালয়ে সন্তানদের কীভাবে পড়তে দেবো। এর আগেও প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। এটা সবাই জানে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন হিরু দাবি করেন, ‘ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে গেলে প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরে আবার মোবাইল ফোনে কল করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এতে আমরা জীবন নিয়ে সংশয়ে আছি। নিরাপত্তা চেয়ে ডামুড্যা থানায় জিডি করেছি।’

প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার দাবি করেন, ‘অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপরও বিষয়টি নিয়ে দুই সাংবাদিক বিরক্ত করায় তাদের গালিগালাজ করেছি।’ এ জন্য তিনি সাংবাদিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডামুড্যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পেরেছি। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তদন্ত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’