প্রতিবেশীর তোলা দেয়ালে অবরুদ্ধ ৫ পরিবার

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে দেয়াল তুলে প্রতিবেশীদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের ফলসি গ্রামের প্রভাবশালী আসলাম শেখের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। 

এ অবস্থায় গত এক বছর ধরে অবরুদ্ধ হয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে পরিবারগুলো। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বৃদ্ধ ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। 

ভুক্তভোগী লাল্টু সরদার বলেন, ২০০ বছর ধরে পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছি। কিন্তু প্রতিবেশী আসলাম শেখ, লাড্ডু শেখ ও হাসান শেখ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। 
 
ইটের দেয়ালের পাশাপাশি বাঁশের বেড়া তুলেও চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছেসরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচটি পরিবারের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তর পাশে আসলাম শেখ ইটের দেয়াল তুলে হাঁটার পথও বন্ধ করেছেন। তার পাশে লাড্ডু শেখ টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছেন। দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে পানি থাকায় যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা নেই।

অবরুদ্ধ পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য ফুলজান বেগম (৭৫) বলেন, এক বছর ধরে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে রাস্তার ব্যবস্থা করে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। কিন্তু এখনও কোনও ফল পেলাম না। 

এ বিষয়ে জানতে আসলাম শেখের ফোনে কল দিলে তিনি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওই পরিবারগুলো আমাদের অনেক অত্যাচার করে। গাছের আম নিয়ে যায় এবং পুকুরের মাছ নিয়ে যায়। তাই আমার ছোট ভাই রাগ করে দেয়াল নির্মাণ করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।’

সুষ্ঠু সমাধানের আশায় বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও ফল পাননি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরানিজামকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলী বলেন, ‘পাঁচটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক। বিষয়টি সমাধানের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি।’

বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ইউএনও মো. মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সমাধান করে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সমাধান করতে পারেননি। তবে দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।