সেই চেয়ারম্যানের শ্যালকের বাসা থেকে গৃহপরিচারিকা ও নবজাতক উদ্ধার

কাপাসিয়ায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে (১৬) সন্তানসহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাদের উদ্ধার করেন। পরে বিকালে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী। গাজীপুরের পিবিআই পরিদর্শক হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, ওই কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের শ্যালক মামুনের বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। মামুন কাপাসিয়া উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ সময় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আদালত সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে নবজাতকসহ কিশোরীকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পিবিআই পরিদর্শক আরও বলেন, নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কিশোরী এবং নবজাতকের নমুনা সংগ্রহে আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। শুনানি শেষে অনুমতি সাপেক্ষে বিষয়টি সমাধান হবে। পরে অভিযুক্ত এবং তদন্তে অন্য কারও নাম এলে তাদেরও নমুনা সংগ্রহের জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হবে। তাছাড়া ধর্ষণ, অপহরণ প্রভৃতি অভিযোগের তদন্ত চলছে। কিশোরী আনুমানিক সাত বছর ধরে ওই চেয়ারম্যানের বাসায় কাজ করতো। 

গৃহপরিচারিকা মা হওয়ার ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

অভিযোগ রয়েছে, বছর খানেক আগে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন একাধিকবার ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে সে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় জুন মাসের শেষের দিকে চেয়ারম্যানের বাড়ির কাজের ছেলে রইছ উদ্দিনের সঙ্গে কিশোরীকে বিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই ছেলে পালিয়ে যায়। পরে চেয়ারম্যান ওই কিশোরীকে গত ১ আগস্ট কাপাসিয়ার তরগাঁও খেয়াঘাট এলাকার প্রবাসী জামান মিয়ার বাড়িতে ঘর ভাড়া করে দেয়। ১৫ আগস্ট রাতে কিশোরীর প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে কাপাসিয়ার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১৬ আগস্ট ওই কিশোরী কন্যাসন্তান জন্ম দেয়। পরে নবজাতকসহ বাসায় ফিরে ওই কিশোরী। তবে নবজাতকের বাবা হিসেবে কোনোভাবেই যেন চেয়ারম্যানের নাম না আসে এ জন্য তাকে শাসাতো অভিযুক্তের লোকজন।

এ অবস্থায় সোমবার (২৮ আগস্ট) বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা ভিকটিমের সাক্ষাৎকার নেন। পরে ওই রাতেই চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও শ্যালক মামুন মিয়া লোকজন নিয়ে এসে ভিকটিমকে নবজাতকসহ ভাড়া বাসা থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিল।  

তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনের দাবি, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ওই নবজাতকের বাবা আমি নই, আর কাউকে আমি ধর্ষণও করিনি।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট কিশোরীর বাবা গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে সাখাওয়াত হোসেনকে অভিযুক্ত করে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা করেন। পরে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।