ফাঁড়িতে এক ব্যক্তি নিহত

পুলিশের বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে লেবু মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ এনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। মির্জাপুরের বাঁশতৈল বাজারের গোড়াই-সখীপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল সোয়া ৩টা পর্যন্ত অবরোধ করে রাখেন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, কোনও মামলা ছাড়াই লেবু মিয়াকে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সেলিম রেজা ও নেছার উদ্দিন আটক করে নিয়ে যান। এরপর সেখানে তাকে মারধর করে হত্যা করা হয়। হত্যার বিষয়টি আত্মহত্যা বলে নাটক সাজাচ্ছে পুলিশ। আমরা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করছি। তবে পুলিশের দাবি তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

নিহত ব্যক্তি বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে। এর আগে, সখিনা বেগম নামে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার দুপুরে তিনিসহ দুজনকে পুলিশ আটক করে। পরে ফাঁড়িতেই লেবু মিয়া মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় আট বছর আগে সখিনা বেগম (৪৩) নামের এক নারীর সঙ্গে বাঁশতৈল গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মফিজুর রহমানের (৪৭) বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ওই নারী একই গ্রামে আলাদা বাড়ি তৈরি করে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। মেয়েদের বিয়ে হওয়ায় পুত্রবধূকে নিয়ে ওই বড়িতে থাকতেন তিনি। রবিবার রাতে সখিনা বাড়িতে একা ছিলেন। এরপর সোমবার সকালে তিনি ঘুম থেকে না ওঠায় পাশের বাড়ির লোকজন খোঁজ করতে গিয়ে লাশ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে মির্জাপুরের বাঁশতৈল ফাঁড়ির পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। তার পরিবারের দাবি, সখিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সখিনার সাবেক স্বামী মফিজুর ও একই গ্রামের বাসিন্দা লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর হাজতখানায় রাখে। এর মধ্যে সেখানে লেবু মিয়া মারা যান।

বিক্ষোভে অংশ নেন লেবু মিয়ার স্ত্রী আলিয়া বেগম, তার মেয়ে রচনা আক্তার, বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লাল মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলীসহ এলাকাবাসী।

তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন, ‌‘ফাঁড়িতে কোনও ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। এসআই সেলিম রেজা ও নেছার উদ্দিনের  বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা।’

মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, ‘ওই ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’