‘আল্লাহ শেখ হাসিনার ওপরে রহমতের চাদর বিছিয়ে রেখেছেন’

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সবগুলো জাতীয় পত্রিকায় দেখলাম অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থার মধ্যেও আল্লাহ শেখ হাসিনার ওপরে রহমতের চাদর বিছিয়ে রেখেছেন। এই কারণে বাংলাদেশের ওপরে, দেশের মানুষের ওপরে আল্লাহর রহমত আছে। বিশ্বব্যাংকসহ সবাই বলছে- আগামী ২০২৩ সালে বাংলাদেশের যে মুদ্রাস্ফীতি বা অর্থনৈতিক অবস্থা থাকবে, তা ভারত ও চীনের তুলনায় ভালো অবস্থানে থাকবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্ল্যান করে দেশটাকে নিয়ে এগোচ্ছেন। কিন্তু যারা বলতে চান শেখ হাসিনার সরকারের পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলবেন জনগণকে দিয়ে, তাদের বলতে চাই- আপনাদের পাশে সন্ত্রাসী থাকতে পারে, আগুন সন্ত্রাসী থাকতে পারে, জঙ্গিরা থাকতে পারে-কিন্তু এ দেশের মানুষ আপনাদের পক্ষে নাই।’ 

বুধবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া রাইফেল ক্লাবে জাতীয় শ্রমিকলীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। 

এ সময় তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘জনগণ বিবর্জিত শক্তিগুলো হায়েনার রূপ নিয়েছে। এই হায়েনার রূপ নিয়ে হঠাৎ করে রাজনীতিকে উত্তপ্ত করার জন্য লাঠি-রড নিয়ে এমন সব ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে-যা কোনও রাজনীতিক ভাষা হতে পারে না। তারা যদি সত্যিকারের রাজনীতিবিদ হতো তাহলে- সারা পৃথিবীর অর্থনীতি যেখানে ধসে পড়েছে, এমনকি ব্রিটেনের মতো দেশে বিদ্যুৎ খাতে দাম বেড়ে গেছে, সেখানে বাংলাদেশের মানুষ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আর জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা দেশটাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তিনি কোনও কথা লুকাচ্ছেন না। তিনি বার বার বলছেন এক খণ্ড জমিও কেউ ফেলে রাখবেন না, জমিতে চাষ করেন।’ 

তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি। আমাদের মধ্যে ভালো-খারাপ আছে। রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ প্রতিটি সেক্টরে ভালো-খারাপ আছে। কিন্তু সারা পৃথিবী যখন অর্থনৈতিক সংকটে, তখন আমাদের লাঠি-বাঁশ নিয়ে মিছিল করে আঘাত করার কথা না। আমরা যদি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হয়ে থাকি তখন আমাদের কী করার কথা? বিরোধী দল কিংবা সরকারি দল- যে দলেই থাকি না কেন, আমাদের তখন বলা উচিত- আমাদের সবাইকে এখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের ভবিষ্যত বংশধরদের কথা চিন্তা করে হলেও এটা করা উচিত। কিন্তু অনেকে এটা করছি না, আর যারা করছি না তারা কি দেশকে ভালোবাসি? নির্বাচনতো দেড় বছর পরে- ওই সময় না হয় আমাদের মারেন-কাটেন যা খুশি কইরেন। এখন আমরা সবাই মিলে দেশকে আগে বাঁচাই।’ 

তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তার বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা নিমন্ত্রণ না পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার পরিবার ও জাতির পিতার কন্যা থেকে আমি এবং আমার পরিবার যেটা পেয়েছি- আমাদের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু আছে বলে মনে হয় না। তবে নারায়ণগঞ্জের কিছু পত্রিকা নিউজটাকে অন্যভাবে টার্ন করছে, আমার এটা ভালো লাগছে না। আমার ভাইয়ের পরিবার......., আমি নিজেও কিন্তু এই অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ কার্ড পাই নাই। তিন দিনের মধ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের কার্ড সবাই ঠিকমত পেয়ে উঠতে পারে নাই। আমাদের অনেকে পায় নাই। কিন্তু এটাকে ভিন্নভাবে রঙ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই কালার (রঙ) দেওয়া উচিত না। তবুও এটা করার দায়িত্ব ছিল প্রশাসনের ওপরে। কিন্তু ওনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, এ কারণে পারেন নাই।’ 

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দনশীল, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের আইন ও দরকষাকষি বিষয়ক সম্পাদক এবং বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন, জেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির, সদস্য সচিব মো. কামাল হোসেনসহ প্রমুখ।