পদ না পেয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে যুবলীগ থেকে বিদায়, নেতাদের সমালোচনা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পদ না পেয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সানোয়ার হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতা। রবিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাটিয়ার হাটবাজারে তিনি দুধ দিয়ে গোসল করেন। পরে গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে তার সমালোচনা করেছেন দলীয় নেতারা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে আহ্বায়ক পদে ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেনসহ তিন জন পদপ্রত্যাশী ছিলেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এতে আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক করা হয় রোমান সরকারকে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় সুরুজ আলমকে। কমিটিতে কার্যকরী নির্বাহী সদস্য ১ নম্বরে রাখা হয় সানোয়ার হোসেনকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সানোয়ার হোসেন স্থানীয় খাটিয়ার হাটবাজারে দুধ দিয়ে গোসল করেন।

এ সময় সানোয়ার হোসেন বলেন, ‌‘আমি স্বেচ্ছায় আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি নিলাম। দলের কার্যক্রমে কোনও জায়গায় নেতার সঙ্গে কোথাও যাবো না। এই আমি কান ধরে ওঠবস করলাম। জীবনে আওয়ামী লীগের কোনও অনুষ্ঠানে যাবো না। আওয়ামী লীগে থাকতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যারা দল নিয়ে কথা বলেন, তারা আমার আশপাশে আসবেন না। আমাকে কেউ বিরক্ত করবেন না।’ এ সময় সানোয়ার তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও দুধ দিয়ে ধুয়ে ফেলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার পরিবার আজগানা ইউনিয়ন পূর্বাঞ্চলের একমাত্র আওয়ামী পরিবার। আমার পরিবার ছাড়া এই অঞ্চলে আগে কোনও সক্রিয় আওয়ামী পরিবার ছিল না। আমার পরিবারের এত ত্যাগ থাকার পরও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদ পেলাম না। এজন্য রাজনীতি থেকে বিদায় নিলাম।’

এ ব্যাপারে আজগানা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক লতিফ সিকদার বলেন, ‘গত শনিবার আজগানা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে সানোয়ার হোসেন সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি রাজনীতিতে অতটা সক্রিয় না হলেও আওয়ামী লীগে তাদের পরিবারের অবদান রয়েছে। এজন্য তাকে কার্যকরী সদস্য রাখা হয়। নিজেকে ভাইরাল করতে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এমন কাজ করা সমীচীন হয়নি তার।’

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শামীম আল মামুন বলেন, ‘পদ তো আর সবাই পাবে না। কেউ না কেউ তো বাদ পড়বেই। সানোয়ার হোসেন বড় নেতা হয়ে থাকলে অবশ্যই বড় পদ পেতেন। তবে কমিটি গঠনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। দুধ দিয়ে গোসল করে এমন কাণ্ড ঘটানো ঠিক হয়নি তার।’