‌‘সব ফসল ডুবে গেছে, দেনা পরিশোধ করবো কীভাবে?’

‘হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফসল এখন পানির নিচে। যা আবাদ করেছিলাম সবই ডুবে গেছে। পুনরায় মাটি প্রস্তুত করে আবাদ করতে হবে। কিন্তু এতে লাভের মুখ দেখতে পারবো না। অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো। এখন কীভাবে পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করবো? আর সংসারই বা চলবে কীভাবে?’

কথাগুলো বলছিলেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কৃষক সোবাহান শেখ। কয়েকদিন আগের বৃষ্টিতে সোবাহান শেখের মতো অনেক কৃষকের আবাদ করা শত শত একর জমির বেগুন, পেঁয়াজ, শসা, শাক-সবজি ও টমেটোসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। এসব উপজেলার মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও উজানচর ইউনিয়নের অনেক জমি জেগে উঠেছে। জেগে ওঠা জমিতে কৃষক আগাম ফসল উৎপাদনের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে জমি প্রস্তুত করে পেঁয়াজ, টমেটো, বেগুন ও বিভিন্ন শাক-সবজি লাগিয়েছেন। অনেক কৃষক এরই মধ্যে আবার আগাম সবজি বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছেন। এদিকে হঠাৎ অতি ভারী বৃষ্টিতে গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা পাড়ের কয়েকশ’ একর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে।

Rajbari-1

কৃষক মোজাফফর সরদার বলেন, ‘বেশি দামে সার ও তেল কিনে আগাম পেঁয়াজ বুনেছিলাম। কিন্তু সেই ক্ষেত এখন পানির নিচে। বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেলো আমাদের।’

দেবগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবাই কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। হাজার প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা কৃষিকাজ করে যাচ্ছি। এবার তিন বিঘা জমিতে টমেটো ও দুই বিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ করেছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টি হয়ে সব ফসল ডুবে গেছে। মাসখানেক পরে ফসলগুলো বাজারে বিক্রি করা যেতো। বিশাল ক্ষতি হয়ে গেলো আমার।’

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, ‘অসময়ে বৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলে ডুবে গেছে। নিচু এলাকায় এখনও পানি বাড়ছে। এতে গোয়ালন্দ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের ফসলি জমি ও ফসল তলিয়ে গেছে। এখনও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি। জরিপ চলছে।’