বন বিভাগের জায়গা দখল করে প্রভাবশালীদের মার্কেট নির্মাণ

গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। দখলদাররা উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই হওয়ায় বাধা দিচ্ছে না বন বিভাগ। তবে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দায় সেরেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের বাউনী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে মার্কেটের ফাউন্ডেশন তৈরি করেছেন ফেলেছেন দখলদাররা। তারা হলেন শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বড় ভাই কফিল উদ্দিন প্রধান, ছোট ভাই আবুল কাসেম প্রধান, চাচাতো ভাই শামসুদ্দিন প্রধান ও মনিরুল প্রধান, ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আবুল কালাম, কুয়েতপ্রবাসী ওমর ফারুক, অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য এমারত হোসেন, বিল্লাল হোসেন প্রধান এবং মো. হাছান। তারা প্রত্যেকে ওই মার্কেটে একটি করে দোকান নির্মাণ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, বাউনী বাজারের ভেতরে বন বিভাগের জায়গা দখল করে প্রকাশ্যে মার্কেট নির্মাণ করলেও দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় নীরব ভূমিকা পালন করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রথমে দখলদাররা বাজারের ভেতর দোকানঘর তুলে দীর্ঘদিন ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে ওই জায়গায় পাকা দোকান নির্মাণ করছেন তারা।

দখলদারদের একজন মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে মো. হাছান। তিনি বলেন, ‘যেখানে দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি বন বিভাগের জায়গা। আগে ওই স্থানে আমার বাবা মাটির ঘর তৈরি করে ব্যবসা করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর আমি ব্যবসা করছি। সবাই ইট-সিমেন্ট দিয়ে পাকা দোকান নির্মাণ করছেন, তাই আমিও করছি। যদি না করি তাহলে আমার দোকানের জায়গা দখল হয়ে যাবে। এসবের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় সার ডিলার ফরহাদ।’

ওই বাজারের সার ডিলার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘দোকান নির্মাণের টাকা আমার কাছে জমা রেখেছেন তারা। ওই টাকা দিয়ে রড, সিমেন্ট, ইট ও বালু কিনে দিচ্ছি তাদের। স্থানীয় ইউসুফ প্রধান ও সাবেক মেম্বার আবুল কালাম দোকান নির্মাণে সহযোগিতা করছেন।’

শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই ইউসুফ প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে আমরা সরকারের লোক। এজন্য বনের জায়গায় ঘর নির্মাণে তাদের সহযোগিতা করছি। এখানে আমার দোকান নেই।’ 

এ ব্যাপারে শ্রীপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর বজলুর রহমান বলেন, ‘বনের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের খবর পেয়েছি আমরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দিয়েছি, কিন্তু কাজ হয়নি। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

বন বিভাগের জায়গায় মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল করিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন বনের জমি দখলে রাখা বেআইনি। দখল করা জমিতে কাঁচা কিংবা পাকা দোকান নির্মাণের নিয়ম নেই। দোকান নির্মাণের ছবি থাকলে আপনি আমার হোয়াটসঅ্যাপে দেন। আমি ব্যবস্থা নেবো।’