কাজে এসে দেখলেন অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ, বিক্ষোভ শ্রমিকদের

গাজীপুরে নিট এশিয়া গ্রুপের একটি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কালিয়াকৈরের রতনপুর এলাকার নিট এশিয়া কারখানার ৩ নম্বর ইউনিটের শ্রমিকরা কারখানার সামনে এ বিক্ষোভ করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক নিতাই চন্দ্র সরকার বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ওভারটাইমসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছিলেন শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেয়ে গত শনিবার কর্মবিরতি ও ভবনের চারতলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ শুরু করেন তারা। এ সময় কারখানার এক সুপারভাইজারকে লাঞ্ছিত করেন উৎপাদন মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম)। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয় এবং তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই কর্মকর্তার শাস্তি ও অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। রবিবার ওই দাবিতে কারখানায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, সোমবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে কারখানায় আসেন। এ সময় কারখানার গেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে জিএমসহ কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য একই প্রতিষ্ঠানের ২ নম্বর ইউনিটের শ্রমিকদের আহ্বান জানানো হয়। পরে ২ নম্বর ইউনিটের শ্রমিকরাও আন্দোলনে অংশ নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পাশাপাশি বিজিএমইএ’সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দও আসেন। মঙ্গলবার বিজিএমইএ’র দফতরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কারখানা মালিকপক্ষের আলোচনার আশ্বাস দিলে বিকালে কর্মসূচি স্থগিত করেন শ্রমিকরা।

কারখানার সহ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নোটিশে জানানো হয়, গত ২৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় চার তলায় কর্মরত কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক কাজ বন্ধ করে সমাবেশ করেন। এতে অন্যান্য শ্রমিক অংশ নেন। ফলে কারখানার উৎপাদন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাদের বারবার কাজে যোগদানের জন্য বলা হলেও যোগ দেননি। পরদিনও তারা কাজ বন্ধ রেখে কারখানার কর্মকর্তাদের নানাভাবে হুমকি দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন।’

শ্রমিকরা অযৌক্তিক ওভারটাইম কাজ করতে চাওয়ায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছি জানিয়ে কারখানার মালিক মতিন চৌধুরী বলেন, ‘অর্ডার না থাকায় আমাদের এখন অতিরিক্ত কাজ করানো হয় না। অর্ডার খুবই কম, আমরা  প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা কাজ করাই। কিন্তু শ্রমিকরা অযৌক্তিকভাবে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা ওভারটাইম কাজের দাবি করছেন। সেইসঙ্গে কয়েকজন কর্মকর্তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে কাজের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারখানা খুলে দেওয়া হবে।’