৪ বছর পর জানা গেলো শিক্ষিকা হত্যার রহস্য

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে পৈতৃক সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য স্কুলশিক্ষিকা মমতাজ বেগমকে হত্যা করেছিল তারই ভাই-ভাতিজা। চার বছর পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত মমতাজ বেগমের ভাতিজা উচ্ছাস সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। নিহত মমতাজ বেগম ঢাকার তেজগাঁও নাখালপাড়া এলাকার আওরঙ্গজেব খান দুলুর স্ত্রী এবং নাখালপাড়ার হলি মডেল কিন্ডারগার্ডেন ইংলিশ বেইজড বাংলা মিডিয়াম স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন। 

গ্রেফতার উচ্ছাস সরকার (৩০) গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি থানার বাঘিয়া এলাকার মো. দুলাল সরকারের ছেলে। গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন উচ্ছাস। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে রবিবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে উচ্ছাসকে গ্রেফতার করা হয়। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, ‌‌‘২০১৯ সালের ১ মার্চ গাজীপুরের বাঘিয়া এলাকায় ভাই আব্দুর রশিদ সরকারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন মমতাজ বেগম। পরদিন ২ মার্চ বাঘিয়া ডিসপুকুরপাড়ার মণ্ডলবাড়ির ফাঁকা জায়গায় মমতাজের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মমতাজের বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মৌ অজ্ঞাতদের আসামি করে কোনাবাড়ি থানায় মামলা করেন। ২৩ দিন পর পিবিআই সদর দফতরের নির্দেশে হত্যা মামলাটি পিবিআই গাজীপুরকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে হত্যার চার বছর পর রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। সেইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত উচ্ছাস সরকারকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে উচ্ছাস সরকার বলেছেন, ২০১৯ সালের ১ মার্চ সন্ধ্যায় ভাই আব্দুর রশিদ সরকারের বাসায় আসেন মমতাজ। রাতে পরিবারের সদস্যরা জমি সংক্রান্ত আলোচনায় বসেন। একপর্যায়ে মমতাজ বেগমের ভাই আব্দুর রশিদ টাকা না দিয়ে জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেন এবং শারীরিক নির্যাতন করেন। এতেও রাজি না হওয়ায় রশিদের ছেলে নিলয় সরকার আলোচনায় উপস্থিত সবার সামনে মমতাজকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ভাতিজা উচ্ছাস সরকার, ভাই আব্দুর রশিদ ও তার ছেলে নিলয় সরকার মণ্ডলবাড়ি এলাকায় লাশ ফেলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি মমতাজকে হত্যায় মণ্ডলবাড়ির লোকদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।’

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান বলেন, ‘মমতাজ বেগমের সঙ্গে আসামিদের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। জমি সংক্রান্ত বিরোধে মমতাজকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন ভাই-ভাতিজারা। গ্রেফতার উচ্ছাস সরকারকে ১৩ মার্চ আদালতে সোপর্দ করলে হত্যায় জড়িতদের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’