রাজবাড়ীর এই সড়কটি এখন মরণফাঁদ

রাজবাড়ী জেলার মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে কাদার প্রলেপ জমেছে। গত কয়েক মাস ধরে ইটভাটার জন্য ট্রাকে পরিবহনের সময় সড়কে নরম ও কাদাযুক্ত মাটি পড়তে পড়তে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

কাদামাটির ওই প্রলেপের ওপর রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো সড়ক হয়ে যায় পিচ্ছিল। মুহূর্তের মধ্যে এ সড়ক পরিণত হয় মরণফাঁদে। ফলে সকাল থেকে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এতে বিপাকে পড়েছে সড়কে চলাচল করা পথচারী ও মোটরসাইকেল আরোহীরা। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

এদিন সকাল থেকেই শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কাদাপানিতে জেলার বিভিন্ন ইটভাটার সামনের সড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটায় মাটি বহনকারী গাড়ি থেকে প্রতিদিন মাটি পড়ে এই অবস্থা হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক, সদর উপজেলার নতুন বাজার থেকে মাটিপাড়া সড়ক,মাটিপাড়া টু বাগমারা সড়ক, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে বৃষ্টির পর রাস্তায় পড়ে থাকা মাটি কাদায় পরিণত হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর বড় ব্রিজ সংলগ্ন মহাসড়কের ওপর জমে থাকা কাদামাটিতে মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে যান ঝিনাইদহগামী খাইরুল আলম। তিনি বলেন, ‘অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। পেছনে কোনও যানবাহন ছিল না। থাকলে হয়তো আর বাঁচতে পারতাম না। মহাসড়কের ওপর এতো পরিমাণে ইটভাটার মাটি পড়ে আছে, যেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবগত থাকেন না।’

বাসযাত্রী মো. নুরনবী বলেন, ‘সড়কে মাটির প্রলেপ জমে কয়েক মাস ধরে। সকালে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি হলে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে সড়কে চলাচল করতেই ভয় হচ্ছে। আমাদের বাসটি মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গতি কমিয়ে যাচ্ছে এবং মাঝে মধ্যে সড়কেই আঁকাবাঁকা হয়ে যাচ্ছে। অনেক ভয় লাগছে।’

দৌলতদিয়া ঘাটের বাসিন্দা মো. হুমায়ুন কবির জানান, ‘পদ্মা নদীর পাড়, কলাবাগানসহ বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে দিনে রাতে মাটি কেটে মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন করায় সড়কে মাটি পড়েছে। আজ সকালে সামান্য বৃষ্টিতেই মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে গেছে। আমার সামনেই পরপর দুটি মোটরসাইকেল পড়ে গেছে। তাদের বড় ধরনের কোনও ক্ষতি হয়নি কিন্তু কেটে গেছে।’

রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মার্জিয়া সুলতানা বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন ইটভাটার মাটি বহনকারী যানবাহনের কারণে বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। সম্প্রতি এই ধরনের পরিস্থিতি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিগত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাটি বা বালি বহনে ব্যবহৃত ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন সুন্দরভাবে ঢেকে দেওয়ার জন্য মাটি ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিক সমিতিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করবে। অভিযানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’