হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও চোখ উপড়ে যুবদল নেতাকে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মাহাবুব আলম (৩০) নামে এক যুবদল নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে দুপ্তারা ইউনিয়নের সিংরাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাহাবুব আলম ওই এলাকার হাজী আব্দুল হানিফের ছেলে। তিনি দুপ্তারা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন।

স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, সিংরাটি গ্রামের হাসমত মিয়ার কাছে একটি জমি বিক্রি বাবদ তিন লাখ টাকা বায়না নিয়েছিলেন মাহাবুব। কিন্তু কিছু দিন ধরে বায়নার টাকা ফেরত চাইছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এর ধারাবাহিকতায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় কালিবাড়ি এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যান হাসমতের লোকজন। পরে সিংরাটি এলাকায় হাসমতের নিজ বাড়িতে নিয়ে একটি কক্ষে মাহাবুবকে আটকে রাখা হয়। সেখানে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের চাচা মজিবর রহমান দাবি করেন, ‘জমির বায়নার টাকার ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে মাহাবুবের সঙ্গে হাসমতের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর জেরে সকালে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আটকে রেখে মারধর করে। খবর পেয়ে মাহাবুবের বাবা হানিফ মিয়াসহ পরিবার সদস্যরা ওই বাড়িতে ছুটে যাই। সেখানে আমাদের চোখের সামনে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে তাকে পেটাতে দেখি। এই দৃশ্য দেখে টাকা ফেরত দিয়ে দেবো বলে তার কাছে অনুরোধ করি। তিনি কথা শোনেনি। আমাদের সামনেই মাহাবুবের একটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়। হাতুড়ি দিয়ে পর্যায়ক্রমে তার মাথায় আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে মাহাবুব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত্যু হয়।’ 

আড়াইহাজার থানার ওসি মুহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জমির বায়নার টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে মারধর করা হয়েছে। পরে সে হাসপাতালে মারা গেছে। এই ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে নিহত যুবক কোনও রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে কি না তা জানা নেই।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাহাবুবের হত্যার কথা জানতে পেরেছি। দুপ্তারা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। এ বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নিচ্ছি।’