মধুখালীর ইউএনও’র ওপর হামলা, উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলো বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে

ফরিদপুরের মধুখালীতে খাস জমি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। এ সময় ইউএনও ও তার দেহরক্ষীসহ সাত জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয় ইউএনও’র গাড়ি। বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ইউএনও আশিকুর রহমান, তার গাড়িচালক সুমন শেখ, অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম, দেহরক্ষী জমিরউদ্দিন, ইমরান হোসেন, আহসান হাবিব ও আইয়ুব আলী।

আহতদের মধ্যে ইউএনও আশিকুর রহমান চৌধুরী ও আইয়ুব নামে এক ব্যক্তিকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে, আহতদের দেখতে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছুটে আসেন জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার শাহজাহান। এ সময় সঙ্গে ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীর, উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম আরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে কয়েক একর খাস জমি এলাকার প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। সে জমি সরকারিভাবে উদ্ধার করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা নিজস্ব জমি দাবি করায় ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।

আহত হয়েছেন ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য

ইউএনও বলেন, উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তরপুর গ্রামে খাস জমিতে ঘর নির্মাণের জন্য লেবারশেড ও মালামাল নিলে স্থানীয়রা লুট করে নিয়ে গেলে আমি সেখানে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি ও আমার লোকজনের ওপর হামলা করে গুরুত্ব আহত করে।

মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ইউএনওকে ফরিদপুর নিয়ে গেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পরে ইউএনওকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুরে পাঠানো হয়েছে। আশ্রয়ণের জমি-ঘর নিয়ে স্থানীয়রা তার ওপর হামলা চালায়।

জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ঘটনা যারাই ঘটাক চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। যেখানে যেটুকু খাস জমি আছে উদ্ধার করে ভূমিহীনদের ঘর করে দেওয়া হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন বলেন, আমি বাইরে ছিলাম, ইউএনও স্যারের মোবাইল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি।

মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, এলাকায় অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে হামলায় জড়িতরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।