বিরোধ মীমাংসার জন্য আলোচনায় বসে সংঘর্ষ, একজন নিহত

নরসিংদীতে স্পিডবোট ঘাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের কোপে সাজিন নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচ জন। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের কাউরিয়াপাড়া এলাকা (মসজিদ সংলগ্ন) সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত সাজিন শহরের কাউরিয়াপাড়া এলাকার আমির মিয়ার ছেলে এবং শহরের আলীজান জে এম একাডেমির ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আহত পাঁচ জন হলেন- সাজিনের বাবা আমির হোসেন (৩৫), তালহা (১৪), ওবায়দুল (২২), রায়হান মিয়া (২৩) ও জহিরুল ইসলাম (৪৫)। তাদেরকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত তিন জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় সাবেক পৌর কমিশনার আলমাছ মিয়া ও মতিন মিয়ার মধ্যে ইজারা পাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। কাউরিয়াপাড়ার (স্পিডবোট ঘাটের) ইজারার জন্য দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, কাউরিয়াপাড়ার স্পিডবোট ঘাটটির ইজারায় ছিলেন মতিন মিয়া। তবে গত বৈশাখ মাস থেকে নতুন করে ইজারা পান আলমাছ মিয়া। এরপর থেকেই মতিনের লোকজন ঘাট থেকে চাঁদা তোলা ও যাত্রীদের হয়রানি করে আসছিলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শান্তিপূর্ণ সমাধানে নিজেদের লোকজন নিয়ে আলোচনায় বসেন আলমাছ ও মতিন। আলোচনা চলাকালে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় মতিনের পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালান। তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে সাত জন আহত হন। আহতদের মধ্যে চার জনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নুসরাত শারমিন জানান, হাসপাতালে আনা আহত চার জনের মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অন্য তিন জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আলমাছ ও মতিন মিয়ার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া যায়।

নরসিংদী মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, ঘটনাস্থল থেকে জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। নিহত কিশোরের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।