মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অপর এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসামিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিঙ্গাইর উপজেলার জ্যাইল্যা গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শাহীনুর রহমান, একই উপজেলার দাসেরহাটি গ্রামের আহম্মেদ দেওয়ানের ছেলে লিটন হোসেন, একই গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে রিপন হোসেন এবং দক্ষিণ চারিগ্রাম গ্রামের মমেজ উদ্দিনের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন। এর মধ্যে শাহীনুর ও লিটন রায় দেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রিপন ও উজ্জ্বল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২ অক্টোবর রাতে উপজেলার চারিগ্রাম বাজারে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেলে দাসেরহাটিতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন আলম হোসেন (৩৫)। দাসেরহাটি গ্রামের সেতুর কাছে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্য করা হয়। হত্যার পর আলমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মোবাইল এবং নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান আসামিরা। পরদিন ভোরে সেতুর পাশে আলমের লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় সিঙ্গাইর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকালীন চেয়ারম্যান মাজহারুল হক বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন।

এরপর যশোরের ঝিকরগাছা থেকে আসামি শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে আলমের মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিঙ্গাইর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আইয়ুব খান পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সাক্ষ্য ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সোমবার চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একই মামলার আসামি শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার হওয়ায় তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌসুঁলি (এপিপি) মথুর নাথ সরকার এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মেজবাউল হক এবং খলিলুর রহমান।