মা গেলেন দুধ আনতে, এই ফাঁকে ‘সন্তানকে হত্যা’ করলেন বাবা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আয়েশা সিদ্দিকা নামে দুই মাসের শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বালুর মাঠ এলাকায় জসীমউদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আয়েশা ওই এলাকার জসীমউদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয় মিয়ার (২৮) মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, সকালে স্বামী-স্ত্রী মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। স্ত্রী নাদিয়া সকাল সাড়ে ১১টায় কাঁচপুর বাজারে মেয়ের জন্য দুধ কিনতে যান। বাসায় ফিরে দেখেন মেয়ে আর বেঁচে নেই। কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে বাড়ির লোক এসে দেখেন শিশুটির নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। মেয়ের বুকে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। হৃদয় মাদকাসক্ত। তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় সময় ঝগড়া লেগেই থাকতো। টাকার জন্য এই কাজ করেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

নিহতের মা নাদিয়া আক্তার দাবি করেন, জসীমউদ্দিনের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে তারা ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন। একসময় হৃদয় সিনহা গার্মেন্ট কাজ করতেন। তবে গার্মেন্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কাজ করে তাদের সংসার চলতো। এরপর থেকে ধীরে ধীরে তার স্বামী মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। তাছাড়া তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। বৃহস্পতিবার সকালে মেয়ের খাবার নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। দুই মাস বয়সী মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকাকে সকালে গোসল করিয়ে ঘুম পাড়িয়ে পাশের বাড়িতে দুধ আনতে যান মা। ঘুম থেকে জেগে মেয়ে কান্না করায় মুখ চেপে ধরে হত্যা করেছে।

তিনি আরও জানান, পরে ঘরে গিয়ে শিশুর পাশে বসে তার মুখে রক্তের ছাপ দেখতে পান। ডেকে সাড়া না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন হোসেন বলেন, এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জনকে আটক করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত বাবা পলাতক রয়েছে। তদন্তের পরে নিশ্চিত করে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।