গতকাল থেকে বাবার লাশের অপেক্ষায় আছি, এখনও পাইনি

‘সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় বাবা মারা গেছেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাবার লাশ দেবে। বাবার (শফিউদ্দিন) লাশ এখনও পাইনি। আমরা লাশের অপেক্ষায় হাসপাতালে দাঁড়িয়ে আছি। লাশ নিয়ে বাড়িতে যাবো।’

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় মুঠোফোনে কথাগুলো বলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া বিএনপি নেতা শফিউদ্দিনের (৭৪) ছেলে সোহেল।

মৃত শফিউদ্দিন কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাওনাট ডোয়াইপাখুরি পূর্বপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ারুল করিম জানান, কারাবন্দি হাজতি সোমবার বিকাল ৩টার দিকে মারা গেছেন। তাকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হাসপাতালে মারা যান।

শফিউদ্দিনের ছেলে সোহেল বলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানা পুলিশ বাবাকে ডোয়াইপাখুরির নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পরে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বরের একটি পুরোনো বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠায়। অসুস্থ ও বয়স্ক বিবেচনায় আদালত জামিন ও রিমান্ড না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠান। তিনি দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগজনিত কারণে কারাগারের হেফাজতে গাজীপুর সদর ও ঢামেক হাসপাতালে কয়েক দফা চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ গত ১০ দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর আগে, তিনি গাজীপুর জেলা কারাগারে ছিলেন।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারা তত্ত্বাবধানে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শফিউদ্দিনের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘মৃত শফিউদ্দিন কাপাসিয়া দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট ডোয়াইপাখুরি পূর্বপাড়া দুই নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে ৭৪ বছর বয়সী প্রাক্তন শিক্ষক শফিউদ্দিন পুলিশ হেফাজতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার (ভর্তি শাখা ইনচার্জ) সৈয়দ হাসান আলী জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে শফিউদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া সময়ের ব্যাপার। কখন শেষ হবে তা জানা নেই। শফিউদ্দিনকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে অসুস্থ অবস্থায় আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছিল।’