কাপাসিয়ার চার কমিউনিটি ক্লিনিকে দুই মাসে সাতবার চুরি

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গত দুই মাসে চার কমিউনিটি ক্লিনিকে সাতবার চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। প্রতিটি ক্লিনিকেই একই আসবাবপত্র চুরি হয়।

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ও এলাকাবাসী বলছে, কাপাসিয়ার কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে যখন-তখনই চুরি করছে চোরেরা।

চুরি সংঘটিত হওয়ায় ক্লিনিকগুলো হলো উপজেলার আড়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক, বরুণ কমিউনিটি ক্লিনিক, ডেফুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিক এবং বড়হর কমিউনিটি ক্লিনিক।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ লাইন পরিচালক কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘ক্লিনিকে চুরির অভিযোগগুলো দেখবো। কমিউনিটি ক্লিনিক দেখবে স্থানীয় প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

আড়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোহাম্মদ কামাল হোসাইন বলেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি বিকাল ৩ টায় ক্লিনিকে তালা লাগিয়ে অফিস থেকে বের হই। পরদিন ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯টায় ক্লিনিকে গিয়ে দেখি ২টি কক্ষের তালা ভেঙে দুটি ফ্যান, একটি ব্যাটারি, ওষুধসহ নগদ অর্থ চুরি হয়ে গেছে। গত বছরের নভেম্বর মাসেও একই ক্লিনিকে এ ধরনের চুরি সংঘটিত হয়েছিল। এসব ঘটনায় আমি থানা, স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পরও তেমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রীর মহোদয়ের কাছে যাবো।’

ডেফুলিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) রায়হান রানা বলেন, ‘গত ১১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় অফিসে আসি। এ সময় বাইরে তালা দেখতে পাইনি। কক্ষের ভেতরের তালাগুলো ভাঙা এবং গেট খোলা। ভেতরে প্রবেশ করে দেখি তিনটি ফ্যান, দুটি ব্যাটারি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ চুরি করে নিয়ে গেছে। এক মাসের রোগী দেখার সব টাকাও চুরি করে নিয়ে গেছে।’

বরুণ কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ফাহিদা আক্তার জানান, গত ৩ জানুয়ারি ক্লিনিক থেকে তিনটি ফ্যান, দুটি ব্যাটারি, ওষুধ এবং নগদ টাকা চুরি হয়।

বড়হর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মাহবুবুল আলম শরীফ বলেন, ‘গত দুই মাসে তিনবার চুরি হয়েছে। গত বছরের ২ ডিসেম্বর ক্লিনিকের সৌর প্যানেলের ২৪টি ব্যাটারির মধ্যে ৬টি ব্যাটারি, নগদ টাকা ও ওষুধ চুরি হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর আবারও ৬টি সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারিসহ নগদ টাকা এবং ওষুধ চুরি হয়। গত ১১ জানুয়ারি দুটি ফ্যান ও রোগীদের জন্য বরাদ্দ পানির পাম্প চুরি হয়েছে।’

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রহমান বলেন, ‘তালার আংটা কেটে এসব চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ ধরনের চুরি সংঘটিত হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ওসি বলেছে, তার কাছে সবগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক পাহারা দেওয়ার মতো সোর্স নেই।’

কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আজিজুর রহমান বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকে কী থাকে? এতবার চুরি হয়! যারা ব্যাটারি কেনে তাদের ধরতে হবে।’

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া বলেন, ‘এ ব্যাপারে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বিষয়গুলো দেখছি।’