বিদেশে বসে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা, দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামে গৃহবধূ রোজিনা আক্তার (৩০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত শিহাব শেখ (৪৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

গ্রেফতার শিহাব শেখ পাংশা উপজেলার বাজেয়াপ্ত বাগলী গ্রামের হেকমত আলী শেখের ছেলে। নিহত রোজিনা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামের দুবাই প্রবাসী লিটন শেখের স্ত্রী।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোজিনার স্বামী দুবাই প্রবাসী। রোজিনা তার ছেলে রাসেল (১২) ও রাকাকে (৬) নিয়ে পাংশার পাট্টায় তার স্বামীর বাড়িতে থাকতেন। রোজিনা তার ছেলেকে নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে তার স্বামীর বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন এবং তার মেয়ে অন্য বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে ছিল। অজ্ঞাত আসামিরা ওই রাত ১০টা থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রোজিনাকে হত্যা করে পাট্টা এলাকার ওসমান মোল্লার বাঁশ বাগানে দক্ষিণ পাশে আম বাগানে ফেলে রেখে যায়।

স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের বাবা আবজাল খাঁ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। পরে জেলা পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে তদন্ত শুরু করে এবং গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিহাব শেখকে গ্রেফতার করে।

বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, রোজিনার সঙ্গে তার দুবাই প্রবাসী স্বামী লিটন শেখের পারিবারিক কলহ ছিল। মাঝেমধ্যেই লিটন শেখ তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক  নির্যাতন করতেন। এ কারণে তার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাবা বাড়িতেও চলে গিয়েছিলেন। পরে রোজিনা তার স্বামীর বাড়িতে আবার ফিরে আসেন। এরপর লিটন দুবাই চলে যান। দুবাই গিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

স্ত্রীকে হত্যার জন্য স্থানীয় শিহাব শেখ নামের এক ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে। শিহাব লিটনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা গ্রহণ করেন। পরে আসামি শিহাব ও সহযোগীরা পরিকল্পনা অনুযায়ী রোজিনাকে সুকৌশলে তার বাড়ি থেকে বের করে এনে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ও গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে লাশ বাগানে ফেলে রেখে যায়।

এ বিষয় জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুকিত সরকার বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিহাব নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে রোজিনাকে হত্যা করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি শিহাবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আজ আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।