স্ত্রীর করা মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান কারাগারে

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মাকসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগমের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকালে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিবউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’

মামলা সূত্রে জানা যায়, মাকসুদ হোসেন ১৯৯৮ সালে সুলতানা বেগমকে বিয়ে করেন এবং তাদের সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। সুলতানা বেগম তার দ্বিতীয় স্ত্রী। মাকসুদ এর আগে বিয়ে করলেও সুলতানা তা জানতেন না। সুলতানা বেগমের অভিযোগ, তাদের বিয়ের দুই বছর পর মাকসুদ তার পৈতৃক সম্পত্তির অংশ বিক্রি করে টাকা আনতে চাপ দেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্ত মাকসুদ তার স্ত্রী ও মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যায়। পরবর্তীতে মাকসুদ মাঝেমধ্যে যোগাযোগ করতেন। এরপর ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর আদালতে মামলা করতে বাধ্য হন সুলতানা। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন জানিয়ে মাকসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম অভিযোগ করেন, গত ২১ এপ্রিল তার স্বামী কয়েকজন বন্ধুসহ তার শ্বশুরবাড়িতে এসে আগের করা যৌতুকের মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। এতে সুলতানা ও তার মেয়ে প্রতিবাদ করলে মাকসুদ তাদের মারধর করেন।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সহসভাপতি মাকসুদ হোসেন গত ৮ মে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ১১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

নির্বাচনের আগে গত ২৩ এপ্রিল মাকসুদ হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম তার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলা রেকর্ড (নথিভুক্ত) করে বিষয়টি তদন্তের জন্য বন্দর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পরদিন ২৪ এপ্রিল বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি রেকর্ড হয়। ২৫ এপ্রিল উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ মাকসুদ হোসেনের ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন।