বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে স্লোগান দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১২

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ইটপাকটেল নিক্ষেপ করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁ উপজেলা চত্বরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিমের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- আজহারুল ইসলামের পক্ষের যুবদল কর্মী মো. রতন, মামুন মোল্লা, রনি মোল্লা, মোবারক মোল্লা, রিফাত মোল্লা ও মো. ভুবন এবং রেজাউল করিমের পক্ষের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সোনারগাঁ যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নূর ই ইয়াসিন, যুবদল নেতা আতাউর রহমান, হাবিবুর রহমান, যুবদল কর্মী শাহ পরাণ ও শাহ আলম। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে যুবদল কর্মী রতনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে দাবি উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সেলিম হোসেনের। রতন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও জানান তিনি।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছে। মহান বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সোমবার বেলা ১১টার দিকে সোনারগাঁ উপজেলা চত্বরে জড়ো হন দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে র‌্যালি নিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে একপক্ষের নেতাকর্মীরা আরেকপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে মান্নানের কর্মী মোবারক হোসেন উত্তেজিত হয়ে উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নূর ই ইয়াসিনকে কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে দুই পক্ষের ১১ জন আহত হন। একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

আহত নূর ই ইয়াসিন নোবেল বলেন, ‘আমরা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। সেখানে স্লোগান দেওয়া নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন মান্নানের লোকজন। এতে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।’  

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর বলেন, ‘হামলা করেছে মান্নানের লোকজন। এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এ বিষয়ে কেন্দ্রে মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হবে।’ 

তবে উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সেলিম হোসেন বলেন, ‘রেজাউলের লোকজন ফ্যাসিবাদের দালালদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসলে আমাদের নেতাকর্মীরা এর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ কারণে যুবদল নেতা নূর ই ইয়াসিনের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন আহত হন।’

আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, ‘রেজাউল করিমের লোকজন উসকানিমূলক কথা বলায় আমাদের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা হামলা করায় আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।’ 

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘রাজনৈতিক পুরোনো বিরোধ থেকে হাতাহাতি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়েছে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। পরে শুনেছি, এক যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’