ঈদের দিন রাতে গণপিটুনি দিয়ে দুই ভাইকে হত্যা

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাতে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার কুড়াইতলীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- রাকিব মিয়া (২৬) ও সাকিব মিয়া (২০)। তারা পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার করতেতৈল এলাকার আশ্রাফ উদ্দিন ও রাবেয়া খাতুন দম্পতির ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার ভোরে কুড়াইতলী এলাকায় দুই যুবক অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করার সময় স্থানীয়রা টের পান। ওই সময় তাদের হাতে হিমেল নামের এক যুবক ধরা পড়লেও আরেক যুবক পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন হিমেলকে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে পলাশ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এদিকে, চোর সন্দেহে ওই যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার বিষয়ে জানতে বিকালে কুড়াইতলী এলাকায় যান রাকিব-সাকিবসহ কয়েকজন। এ সময় তারা এক অটোরিকশাচালককে মারধর করে ফিরে আসেন। সন্ধ্যার দিকে পুনরায় ৩০ থেকে ৩৫ জন যুবকসহ রাকিব-সাকিব ওই এলাকায় গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একপর্যায়ে তাদের আটক করে পিটুনি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রাকিব ও সাকিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাকিবের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাকিবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়। 

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক সুদীপ কুমার সাহা বলেন, ‘মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্নসহ দুই ভাইকে সোমবার রাতে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে সাকিবকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। রাকিবের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।’

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, ‘চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটুনি দেওয়ার প্রতিবাদ করতে গেলে পুনরায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর দুই ভাইয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’