রাজবাড়ী সদর বসন্তপুরে আসামিদের বাড়ি ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সাব্বির হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় ‘মূল হোতা’ মো. বছির কবিরাজকে (৪২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব। গ্রেফতার বছির কবিরাজ সদর উপজেলা বসন্তপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের হবি কবিরাজের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১৮ মে) বিকালে বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর মধ্যপাড়া গ্রামে শাহিন শেখ ওরফে রুপল শেখ (২৭) হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ। আকস্মিকভাবে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে কিছু লোক রুপল হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের বাড়িঘরে ভাঙচুর শুরু করলে সেখানে অবস্থানরত এসআই সাব্বির হোসেন এবং এএসআই শেখ আবুল হাশেম ভাঙচুরকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় উত্তেজিত লোকজন হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. মোক্তার বিশ্বাসের বাড়ির সামনে থেকে মনির হোসেন মোল্লা ও মোসলেম মোল্লাসহ অন্যান্য আসামিরা লাঠিসোঁটা ও ইট দিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে এসআই সাব্বির হোসেন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে দুই জনকে আটক করে পুলিশ। পরে সোমবার (১৯ মে) এসআই সাব্বির হোসেন বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, পুলিশ সদস্যদের মারধরের সঙ্গে জড়িত মূল হোতা বছির কবিরাজকে সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার এই মামলার এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. মনির হোসেন মোল্লা ওরফে বড় মনির ও এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামি মো. মোসলেম মোল্লাকে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় মোবাইলে প্রবাসীর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণের অভিযোগ ও চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রাজাপুর গ্রামের ভ্যানচালক দিনমজুর রুপল শেখকে (২৭)। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই রুপলের মামা কালাম মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। শনিবার (১৭ মে) ভোরে মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।