তনুর প্রথম ময়নাতদন্তকারী ডাক্তারকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ সিআইডি’র

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ঘটনায় প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর আগে ১০ এপ্রিল এ চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। মামলার তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান সিআইডি ঢাকার সিনিয়র পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল মঙ্গলবার আবারও কুমিল্লা সেনানিবাসে যান।

তনু হত্যাকাণ্ডএদিকে, দীর্ঘ এক মাসেও মেয়ে হত্যা মামলার কূল কিনারা না পেয়ে হতাশ তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সিআইডির দলটি কুমিল্লা সেনানিবাসে গিয়ে বিকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে। এ সময় সিআইডির এ দলটি তনুর লাশ পাওয়ার স্থান পুনরায় পরিদর্শন ও মামলার বিষয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ছাড়াও তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পরে বিকালে সিআইডির এ দলটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের গেস্ট হাউজে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। কিন্তু বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে সিআইডি।
গত ২০ মার্চ তনু হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ও ডিবির পর মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন কুমিল্লা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিম। গত ৩০ মার্চ সিআইডি ঢাকার সিনিয়র পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিষয়ে সন্ধ্যায় সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান জানান, ‘মামলার তদন্তে ঢাকার সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা আজও সেনানিবাসের ভেতর গিয়ে মামলার বিষয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ ও তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি।’ তবে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের গেস্ট হাউজে সভা কিংবা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়তে পারেন: তনু হত্যার ঘটনা পরিকল্পিত, জড়িত একাধিক ব্যক্তি: বিশেষ পুলিশ সুপার

এর আগে মামলার তদারকি করতে সিনিয়র পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের এ দলটি গত ২, ৩ ও ৭ এপ্রিল সেনানিবাস এলাকায় তনুর মরদেহ উদ্ধারের স্থানসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় সিআইডি তিন দফায় তনুর মা- বাবা, সহপাঠী, ডাক্তার, নার্স, কিছু  সেনা সদস্য, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সর্বশেষ গত ১০ এপ্রিল সিআইডি’র ডিআইজি (ক্রাইম-ইস্ট) মো. মাহবুব মোহসিনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল কুমিল্লা সেনানিবাসে গিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার ও জিওসি মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্লাহ ও স্টেশন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী শওকত আলমের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন।

এদিকে, দীর্ঘ প্রায় এক মাসেও মামলার তদন্তে কোনও সুখবর না পেয়ে হতাশ তনুর পরিবার।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুরে সিআইডির কর্মকর্তারা আমার বাসায় এসে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। মামলার অন্য কোনও বিষয়ে তারা কিছু জানতে চাননি, আমি শুধু ন্যায় বিচার চেয়েছি।’

ইয়ার হোসেন  আরও বলেন, ‘মানুষ মিথ্যা কথা বলে যে কাউকে বাঁচাতে পারে, কিন্তু আল্লাহ সব দেখেছেন, তিনি তো ন্যায় বিচার করবেন। এ কালে আমি আমার মেয়ের ন্যায় বিচার না পেলেও পরকালেতো এর বিচার পাবো। এছাড়া আমার কিছুই বলার নেই। ’

আরও পড়তে পারেন: ফের বরখাস্ত গাজীপুরের সিটি মেয়র মান্নান

 /বিটি/টিএন/