যশোরে হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

আইন-আদালতযশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুমারঘাটা গ্রামের খেজের আলী তরফদার হত্যা মামলায় সর্বহারা পার্টির ছয় সদস্যকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার এক রায়ে স্পেশাল জজ (জেলা জজ) ও বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাকবাঁধাল গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে হায়দার আলী, ময়নাপুর গ্রামের ডাক্তার তুষার মণ্ডল, আড়–য়া গ্রামের হিরামন মালী, সুকৃতি মণ্ডল, খুলনার ডুমুরিয়া থানার প্রীতিশ মণ্ডল, বরাতিয়া গ্রামের প্রশান্ত ওরফে প্রো ওরফে প্রোকবির।

সরকারপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি এসএম বদরুজ্জামান পলাশ।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই রাতে খেজের আলী তরফদারের বাড়ির সবাই খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামিরা খেজের আলীর বাড়িতে যায়। আসামি সুকৃতি মণ্ডল তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। কথা বলার একপর্যায়ে আসামিরা তাকে তাদের সঙ্গে যেতে বলে। খেজের আলী যেতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় খেজের আলীর চিৎকারে বাড়ির সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়েন। এর মধ্যে আসামিরা তাকে রাস্তার উপর কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মাসুদ রেজা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মণিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হায়দার আলীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। সে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার ও অপর হত্যাকারীদের নাম উল্লেখ করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জুলফিকার আলী ভুট্টো ও প্রোকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি, সুকৃতিকে চাঁদা না দেওয়ায় সর্বহারা পার্টির লিডারের নির্দেশে খেজের আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

মামলার তদন্ত শেষে সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২০০৪ সালের ৭ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই  আব্দুর রাজ্জাক।

দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামি জুলফিকার আলী ভুট্টো মৃত হওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্ত সুকৃতি মণ্ডল, হিরামন মালী, প্রশান্ত ওরফে প্রো পলাতক রয়েছে।

/বিটি/