খুলনার ১০ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট: দুর্ভোগে যাত্রীরা

Khulna Pic 03 (27-02-17)খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এদিন খুলনার থেকে দূরপাল্লার কোনও গাড়ি ছেড়ে যায়নি। অভ্যন্তরীণ রূটেও বাসচলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে খুলনা অঞ্চলের সঙ্গে দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

এর আগে রবিবার ভোর ৬টা থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। আর এ ধর্মঘটে ট্যাংকলরি শ্রমিকরাও পালন করার ফলে জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

খুলনা জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সোনা জানান, ১০ জেলায় ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। জামির হোসেনের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তাদের এ দাবির সঙ্গে একমত হয়ে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও রাজবাড়ীসহ আরও ৬টি জেলার শ্রমিক নেতারা পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন।

এদিকে, সোমবার এ ধর্মঘটের ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। খুলনার সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের পাশাপাশি রূপসা, ফুলতলা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, কয়রা, তেরখাদাসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ডে মানুষের ভিড় ছিল। অনেক যাত্রীকে স্ট্যান্ড থেকে ফিরে যেতে দেখা যায়। খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। কয়েকটির আংশিক খোলা থাকলেও লোকজন ছিল না।

তেরখাদা এলাকার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি আমি জানি না। বাস স্ট্যান্ডে এসে গাড়ি বন্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছি।’

টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলেয়া বেগম বলেন, ‘বাগেরহাট যাওয়ার জন্য সকালে সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে এসে কোনও বাস পাইনি। ফলে এখন রূপসা স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখতে হবে। বাস না পাওয়া গেলে অফিসে যাওয়া হবে না।’

জানা গেছে, খুলনা বিভাগের যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরা জেলায় এ ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। সোমবার পরিবহণ শ্রমিকরা সকাল থেকে শহর ও শহরের বাইরে হাইওয়ে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করছেন।

অপরদিকে, রবিবার ঢাকার মতিঝিল কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভা কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই মূলতবি করা হয়। আজ সোমবার বিকেল ৩টায় মূলতবি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত চলমান ধর্মঘট অব্যহত থাকবে বলে ফেডারেশনের আঞ্চলিক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বক্স দুদু জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শেখ শফিকুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘চালক জামিরের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে এ আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-মানিকগঞ্জের জোকা এলাকায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চলচিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত চালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এর প্রতিবাদে রবিবার ভোর ৬টা থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

/এমডিপি/