১০ বছর পর এসিড দগ্ধ দুই নারীকে চিকিৎসা সহায়তা, মামলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ

নাটোর

নাটোরের সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলায় এসিড দগ্ধ দুই নারী প্রায় ১০ বছর পর চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছেন। এই দুটি মামলার আসামিরা গ্রেফতার হলেও তারা এখন জামিনে রয়েছেন। দীর্ঘ ১০ বছরেও বিচারের রায় ঘোষণা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত দুই নারী।

জেলার চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক মামলা চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কক্ষে এসিড দগ্ধ এই দুই নারীকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা ও আসমা বেগম চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে অনুদানের চেক দেওয়ার পর খুশি হলেও বিচারের দীর্ঘ সূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি, আসামিরা তাদের শরীর ঝলসে দিয়ে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম জানান, বার বার স্বাক্ষীদের আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা উপস্থিত না হওয়ায় বিচার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের হাজির করে বিচার কাজ শেষ করার জন্য আদালত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুনীরুজ্জামান ভুঞা, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, নাটোর জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। বর্তমানে মামলা দুটি নাটোর জেলা ও দায়রা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

নাটোর জজকোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০৫ সালের মে মাসে সিংড়া উপজেলার শালিখা গ্রামের সায়েদ আলীর মেয়ে আঞ্জুয়ারা বেগম  বোন ও মার সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। গরমের রাত হওয়ায় তারা তাদের ঘরের জানালা খুলে রেখে ছিলেন। মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করলে তিনজনই দগ্ধ হন। তবে বেশি দগ্ধ হন আঞ্জুয়ারা। এঘটনায় সায়েদ আলী বাদী হয়ে শাহজাহানসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় মামলা করেন।

অপরদিকে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে নলডাঙ্গা উপজেলার বাঙ্গালপাড়া-হলুদঘর গ্রামের আসমা বেগম নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা তার নাম ধরে ডাকতে থাকে। ডাক শুনে আসমা ঘর থেকে বের হওয়া মাত্র তার শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এঘটনায় আসমা বেগমের ভাই আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় নজরুল ইসলামসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পিপি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, কমিটির তহবিলে মোট ৭৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে উল্লেখিত দুই নারীকে মোট ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হল। বাকি টাকা আরেক নারীকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: লক্ষ্মীপুরে গণধর্ষণ মামলায় ৪ জনের ফাঁসি