প্রচণ্ড তাপদাহে যশোরের জনজীবন বিপর্যস্ত

IMG_4943তীব্র তাপদাহে নাকাল যশোর অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ। প্রচণ্ড গরমে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২২ মে) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৩/৪ দিন ধরে চলছে এ তাপদাহ। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যশোরসহ খুলনা বিভাগের ৫ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ সন্ধ্যার পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই সূর্যের বিচ্ছুরণে মধ্যবেলায় প্রকৃতি নেয় অগ্নিরূপ। ভ্যাপসা গরমে একটু প্রশান্তির আশায় কেউ কেউ ভীড় জমাচ্ছেন সরবতের দোকানে।

Jessore Hot weather Pic 23.05.17রিকশার সামনে ছাতা বেঁধে রাজপথে নেমেছেন ৫৫ বছরের আব্দুল মালেক। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে রোদে পুড়ে অসুস্থবোধ হচ্ছিল। কিন্তু বাড়ি বসে থাকার উপায় নেই। যে কারণে রিকশার সামনে ছাতা বেঁধে নেমেছেন। তারপরও তাপ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। রাস্তায় মানুষের সংখ্যা কম। ঘর থেকে কেউ সহজে বের হচ্ছে না।

শাজাহান নামে অপর রিকশাচালক ঈদগাহ মোড়ের গাছের ছায়ায় নিজ রিকশায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাপদাহের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত গরম যে মাঝে মাঝে মনে হয় নিঃশ্বাসও নিতে পারবো না। তাই এখানে বিশ্রাম নিচ্ছি।

গরমের তীব্রতায় প্রশান্তি পেতে রাস্তার ধারে ডাব খাচ্ছিলেন আমির হোসেন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, গরমে ফ্যানের বাতাসও গায়ে লাগে না। আবার বিদ্যুতও ঠিকমতো থাকে না। দিনে রাতে একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় কষ্ট আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে বাড়ির শিশুদের কষ্ট দেখার মত নয়।

IMG_4965এনজিওকর্মী শাওলী সুলতানা জানান, গরমে তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি পালনে হিমসিম খেতে হচ্ছে। পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রামে উপস্থিত মানুষ ঠিকমতো বসতে পারছেন না। খুবই অস্থির অবস্থা। এমন চলতে থাকলে আগামী দিনের কর্মসূচি স্থগিত করতে হবে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক কল্লোল কুমার সাহা বলেন, ‘গরমে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হয় শিশু ও বৃদ্ধরা। ফলে তাদের বিষয়ে একটু বেশি সচেতন থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহে বাচ্চাসহ বড়রাও অসুস্থ হচ্ছে। এ গরমের কারণে তারা পানি শূন্যতা, আমাশয়, ডায়রিয়া, জন্ডিস ও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত দিনমজুর শ্রেণির মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন বেশি। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত ঠাণ্ড কোনও স্থানে নিয়ে পানি স্প্রে করতে হবে। তার শরীরে যাতে বাতাস লাগে সে ব্যবস্থা করা জরুরি। পরে আশপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।’

ডায়রিয়া প্রতিরোধে শিশু, বৃদ্ধসহ সবাইকে বাসি খাবার, রাস্তার পাশের কড়া ভাজা পোড়া ও অপরিচ্ছন্ন খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান ও রোদের মধ্যে বের হলে ছাতা নিয়ে বের হওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
/এআর/