ঘুষ না দেওয়ায় মাদ্রাসা সুপারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সাতক্ষীরা জেলাসাতক্ষীরায় ঘুষ না দেওয়ায় মাওলানা সাইদুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা সুপারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।  শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মাদ্রাসা সুপারের মৃত্যু হয়। 

মাওলানা সাইদুর রহমান কলারোয়া উপজেলার বাকশা হঠাৎগঞ্জ মাদ্রাসার সুপার।  তিনি সদর উপজেলার কাথন্ডা গ্রামের মৃত দেলদার রহমানের ছেলে।

তার ভাই একই মাদ্রাসার শিক্ষক শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান, পাইক দেলোয়ার ও কনস্টেবল সুমন তাদের বাড়িতে গিয়ে তার ভাইয়ের কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে জামায়াতের মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় পাঁচ হাজার টাকা দিতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পরে তাকে ধরে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাই অসুস্থ ছিল। বারবার পুলিশের কাছে অনুরোধ করলেও তারা কথা শোনেনি। পুলিশ তাকে বেদম মারপিট করে।

তিনি জানান, শুক্রবার সকালে তার ভাইকে জেলহাজতে পাঠানো হলে জেল কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দেয়। পরে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তাকে পুনরায় জেলহাজতে পাঠায়। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে পাঠানোর পর আজ শনিবার ভোররাতে মারা যান তার ভাই।

এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মাওলানা সাইদুর রহমান বৈকারী ইউনিয়ন জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক ও নাশকতা মামলার আসামি। আমার নেতৃত্বে ওইদিন তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছে জামিনের কাগজপত্র চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। তিনি অসুস্থতা বোধ করলে আমি আমার খরচে তাকে চিকিৎসা করিয়ে জেলহাজতে পাঠাই। তাকে মারধরের কোনও প্রশ্নই আসে না।’ 

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। তদন্তের পর বিস্তারিত বলতে পারবো।’

সাতক্ষীরা কারাগারের ডেপুটি জেল সুপার আবু জাহেদ জানান, রাত ১টার দিকে অসুস্থ বোধ করলে মাওলানা সাইদুর রহমানকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও)ডা. ফরহাদ জামিল মাদ্রাসা সুপার সাইদুর রহমানকে দুদফায় হাসপাতালে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন:

রোহিঙ্গাদের এক স্থানে আনতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন 

‘কাপড় নয়, খাবার চাই’