বৈরী আবহাওয়ায় দুবলার চরে শুঁটকি তৈরি ব্যাহত, কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও কুয়াশাসহ বৈরী আবহাওয়ার কারণে সুন্দরবনের সাগর উপকূলের বিভিন্ন জেলেপল্লিতে শুটকি তৈরি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে সাগর থেকে আহরিত মাছ শুকাতে না পারায় কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৈরি আবহাওয়ায় উত্তাল সাগরসুন্দরবন বন বিভাগের সূত্র জানায়, প্রতিবছর সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলের গভীর সমুদ্র এলাকায় হাজার হাজার জেলে ও মৎস্যজীবীরা সামুদ্রিক মাছ শিকার করে থাকে। পরে এ মাছ সুন্দরবনের দুবলার চরসহ আশপাশের চর এলাকায় রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়।

দুবলার চরের মৎস্যজীবী ও শুঁটকি ব্যবসায়ী মঈন ফরাজি জানান, তারা চলতি মৌসুমে সাগরে মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি তৈরির জন্য লাখ লাখ টাকা লগ্নি করেছেন। এ অবস্থায় গত তিনদিন বৈরি আবহাওয়ার কারণে শুঁটকি তৈরির জন্য মাছ শুকানো যাচ্ছে না।

দুবলার চরে শুঁটকি তৈরি (ছবি: সংগৃহীত)দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সাগর থেকে আহরিত সামুদ্রিক মাছ রোদের অভাবে না শুকানোর কারণে পচে যাচ্ছে। এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন জেলে ট্রলার ও নৌকায় করে সাগরে মাছ ধরতেও পারছেন না। এ অবস্থায় সুন্দরবন কেন্দ্রিক দুবলার চরসহ আশপাশের মৎস্যজীবী ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা কোটি টাকার ওপরে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

দুবলার চরের ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে মাছ শুকানো যাচ্ছে না, আমরা শেষ। সবারই একই অবস্থা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর তো কারও হাত নাই। দেখি পরে কি হয়।’

দুবলার চরে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত জেলেরাজেলে ও মহাজন সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে এ বছর ১০-১৫ হাজার জেলে ও মৎস্য আহরণকারী জড়ো হয়েছেন সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোর কোল, অফিসকিল্লা, মাঝেরকিল্লা, শেলার চর ও নারকেলবাড়িয়া চরে। সুন্দরবন অভ্যন্তরে ছয়টি মৎস্য আহরণ, শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে দুবলার জেলেপল্লী। হাজার হাজার জেলে ও মৎস্যজীবীরা দুবলার চর এলাকায় মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির কাজে যোগ দিলেও বৈরি আবহাওয়ায় শুঁটকি প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলার চর জেলেপল্লির স্টেশন কর্মকর্তা মোকাম্মেল কবির জানান, বৃষ্টি ও কুয়াশার কারণে মাছ আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবার এ খাত থেকে বন বিভাগের রাজস্ব আয় অনেক কমে যেতে পারে।