বাগেরহাটে কুকুরের কামড়ে আহত ৩৫

বাগেরহাট

বাগেরহাটে কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ১২ জনকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (১৬ মে) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সকাল পর্যন্ত বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ও মির্জাপুর গ্রামে একটি কুকুরের কামড়ে আহত হন তারা। পরে এলাকাবাসী ওই কুকুরটিকে পিটিয়ে হত্যা করে।

অপরদিকে, বাগেরহাটের ফকিরহাটে কুকুরে কামড়ানো (জলাতঙ্ক আক্রান্ত) গরুর দুধ পানে অসুস্থ হওয়ার ভয়ে একটি গ্রামের অন্তত ৯০ জন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলি গ্রামের এসব ব্যক্তি বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভ্যাকসিন নিলেই জলাতঙ্ক কেটে যাবে।

সদর হাসপাতালে কুকুরের কামড়ে আহত চিকিৎসাধীনরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া গ্রামের আনিস হাওলাদার (১০), সুমন শেখ (১০), তাওহিদুল ইসলাম (১৩), সোভিক দে (১৪), মিরাজুন্নাহার লুসি (৩৮), ময়না বেগম (৬০), সাইদ শেখ (৩৫), আনোয়ারা বেগম (৩০), জাইমা বেগম (৬০), মো. আলী শেখ (৪৫), হালিমা বেগম (৫৫) ও সবিতা পাল (৪৫)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. আলী শেখ বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। এ সময় একটি কুকুর আমাকে পেছন থেকে কামড়ে ধরে। পরে স্বজনরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

জাইমা বেগম বলেন, আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠতেই একটি কুকুর দৌঁড়ে এসে আমার ডান হাত কামড়ে ধরে। পরে হাসপাতালে এলে আমাকে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।

কাড়াপাড়া গ্রামের বেল্লাল হোসেন বলেন, গত দুদিনে কাড়াপাড়া ও মির্জাপুর গ্রামের নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৩৫ জনকে কামড়ায় ওই কুকুরটি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে এলাকাবাসী কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।

অপরদিকে, ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফোরকান শিকারী জানান, ফকিরহাটের চাকুলি গ্রামের বেল্লাল শেখের বাড়ির গরুর দুধ ওই গ্রামের প্রায় ১০টি পরিবার নিয়মিত পান করছে। ওই ১০টি পরিবারের সদস্য সংখ্যা একশ’ জনের ওপরে। কয়েকদিন আগে ওই গরুটিকে কুকুর কামড়ালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হলে ওই পরিবারগুলোর সদস্যরা তাদের জলাতঙ্ক হতে পারে বলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে বিষয়টি তাকে জানালে তিনি প্রায় ৯০ জনকে চিকিৎসার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মণ্ডল বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার দুটি গ্রাম থেকে কুকুরে কামড়ানো নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত রয়েছে। তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তারা সবাই এখন সুস্থ আছেন।

তিনি আরও বলেন, কুকুরে কামড়ানো গরুর দুধ পান করলে জলাতঙ্ক রোগ হবে এমনটা মনে করা যাবে না। কারণ, দুধ তো ফুটিয়ে পান করা হয়। তারপরও অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় শিশু ও নারীসহ প্রায় ৯০ জন হাসপাতালে আসে। আমরা তাদের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিন দিয়েছি। এক মাসের মধ্যে চারটি ভ্যাকসিন নিলেই তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে। এতে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ওই চিকিৎসা কর্মকর্তা।