চিতলমারী উপজেলা সদরের কুরমনি গ্রামের টমেটো চাষি অনুপ বিশ্বাস (৩৫) বলেন, ‘৩ লাখ টাকা ঋণ করে শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে এক একর জমিতে টমেটো গাছ লাগিয়েছিলাম। কঠোর পরিশ্রম ও পরিচর্যায় গাছগুলোতে প্রচুর টমেটোও ধরেছিল। আশা ছিল এ বছর টমেটো বিক্রি করে সব ধার-দেনা পরিশোধ করবো। সব ফলবান টমেটো গাছ স্ট্রোক করে হঠাৎ করেই মারা গেছে। এখন ঋণের টাকা তো দূরের কথা, পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচাটাই দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
চিতলমারী উপজেলার কুরমনি, সুরশাইল, পাটরপাড়া, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, শ্যামপাড়া, খড়মখালী, উমাজুড়ি, খলিশাখালী, গরীবপুর, ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের টমেটো চাষি কিশোর রায়, জোতিন পোদ্দার, শষধর রায়, সুকেশ বাড়ৈ, অসীম বসু, তারক বিশ্বাস, শামসুর রহমান, মাহফুজ হাওলাদার, কামরুল ফকির, আজমল বিশ্বাস, নিখিল বড়াল, তরুন সরকার, অমলেশসহ অনেক কৃষক টমেটো চাষ করেছিলেন। তবে রোগের কারণে তারা অর্থনৈতিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নিজেদের দুঃখের বর্ণনা দিয়ে তারা জানান, এ বছর হঠাৎ স্ট্রোক করে শত-শত একর জমির ফলন্ত টমেটো গাছ মরে যাওয়ায় তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এ অঞ্চলের টমেটো চাষিদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে তারা এবার ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।
চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘চিতলমারীতে এ বছর ১ হাজার ৫০০ একর জমিতে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ করেছিলেন। ফলন ধরার পরপরই টমেটো গাছগুলো হঠাৎ করেই স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এটি মাটি বাহিত ব্যাটেরিয়া সংক্রমণ রোগ। এ রোগ গাছের শেকড় একেবারে নষ্ট করে ফেলে। টমেটোর চারা লাগানোর আগে চাষিরা ভালো করে মাটি পরিশোধন না করার কারণেই জমিতে মহামারি আকারে স্ট্রোক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।’