খুলনায় ৪২ সংগঠনের ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধন আজ





খুলনা

খুলনায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা। ভয়ভীতি-হুমকি ও নানা ফাঁদে (ব্ল্যাক মেইলিং) ফেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। গত দুসপ্তাহে একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় খুলনা অঞ্চলের ৪২টি সংগঠন আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকাল ৪টায় মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। ‘খুলনা ব্লাড ব্যাংক’ এর সহযোগিতায় মানববন্ধনে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাবেন।

পুলিশ জানায়, গত ২৫ আগস্ট লোহাপট্টি এলাকায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে ১৬ আগস্ট টুটপাড়া মহিরবাড়ি খালপাড় এলাকায় বিয়ে বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয় ৭ বছরের এক শিশু। পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করলেও শিশুটি ধর্ষণকারীকে সনাক্ত করতে পারেনি। ওই দিনই খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করেন। ২ আগস্ট খুলনার রেলওয়ে থানায় এক নারীকে আটকের পর পুলিশের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ২৯ জুন নগরীর পশ্চিমবানিয়াখামার এলাকায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বেড়াতে নিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে বখাটেরা।
সামাজিক সংগঠন জনউদ্যোগ, খুলনার নারী সেলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শীলু বলেন, ‘খুলনায় ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ফেসবুক-ইন্টারনেটের যথেচ্ছ ব্যবহার, মাদকের সহজ লভ্যতা ও দ্রুত বিচার না হওয়ার সংস্কৃতি এসব অপরাধের জন্য দায়ী।’
সরকারি সুন্দরবন কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে নানা বিষয় সম্পৃক্ত থাকে। পারিবারিক নীতি-নৈতিকতার অভাবে একটি শিশু বিকলাঙ্গ মানসিকতা নিয়ে বড় হয়। তার ওপর মাদকের সহজলভ্যতা, ইন্টারনেটে পর্নো ছবি ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এরা সহজেই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (আরসিডি) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘ইয়াবার সঙ্গে জড়িতরা সামাজিক অপরাধে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। তবে আমরা নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করি। পরে জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবারও একই ধরনের অপরাধ করে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, ‘অপরাধ দমনে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। এ কারণে প্রতিটি ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামকে সতর্ক রাখা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। তবে এ ধরনের অপরাধ নির্মূলে পিতা-মাতা অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি সমাজের সবাইকে সক্রিয় হতে হবে।’