মাগুরার পাট চাষিদের মুখে হাসি



কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে মাগুরার পাটবিজেএমসির দ্বার বন্ধ হলেও সব আশঙ্কা কাটিয়ে হাসি ফুটেছে মাগুরার পাট চাষিদের মুখে। সম্প্রতি সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করায় পাট ক্রয় বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)। ফলে বাম্পার ফলন হওয়ার পরও পাটের বাজার নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ে কৃষক। ব্যক্তি মালিকানাধীন পাটকলগুলো যথাযথ মূল্যে পাট কেনা শুরু করায় সব শঙ্কা কেটে গেছে মাগুরার পাট চাষিদের।

মাগুরা কুষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মাগুরায় ৩৫ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন পাট, যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
মাগুরা নিজনান্দুয়ালীর কৃষক রইস উদ্দীন বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। বিজেএমসি পাট নেওয়া বন্ধ ঘোষণা করায় খুবই চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু আমার তিন বেল পাট উৎপাদিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২৫০০ টাকা মন দরে তা বিক্রি করেছি। পাটের দরে আমি খুবই খুশি।
সদর উপজেলা কছুন্দি গ্রামের কৃষক মোতাহার বলেন, চার বিঘা জমিতে পাট লাগিয়ে ছিলাম। এবার বৃষ্টির কারণে ফলন ভালো হয়েছে। পাটের বাজার নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা শুনলেও ভলো দামেই বিক্রি করতে পেরেছি।
মহম্মদপুরের রামদেবপুরের কৃষক বাচ্চু মোল্লা জানান, এবার আবহাওয়া ভালো ছিল তাই সেচের জন্য বাড়তি খরচ হয়নি। সরকারও করোনার কারণে বীজ, সার ও অন্য প্রণোদনা দিয়েছে। বাজারে পাটের দামও ভালো। সব মিলে ৫০ হাজার টাকা মুনাফা আসবে আশা করছি।
মাগুরার বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী বিধান সাহা বলেন, বিজেএমসির কাছে ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকা পাওনা থাকায় অনেক ব্যবসায়ী এবার পাট কিনবে না বলে ভেবেছিল। কিন্তু বেসরকারি মিলগুলো নগদ অর্থে পাট কেনায় আমরা অনেকেই আবার কৃষকের কাছ থেকে পাট সংগ্রহ করছি। মিলগুলো ভালো দাম দেওয়ায় আমরা কৃষককেও খুশি করতে পারছি।
কৃষি ও প্রকৃতি বিষয়ক স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা পল্লী-প্রকৃতির নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান বলেন, বিজেএমসি দেশের উৎপাদিত পাটের দশ ভাগও ক্রয় করে না। শতকরা ৯০ ভাগ পাট ক্রয় করে বেসরকারি পাটকলগুলো। উপরন্ত, পাকিস্তান ও চীনের পাট আমদানির প্রতি আগ্রহ এবার পাটের বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলেছে। সব শঙ্কা কাটিয়ে কৃষক হাসতে পেরেছে এটাই বড় কথা।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, মাগুরায় এবার বৃষ্টি ভালো হওয়ায় পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি প্রণোদনা কৃষকের উৎপাদন খরচ অনেক কমিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে বিজেএমসি বন্ধ থাকলেও কৃষকের মুখে হাসি আছে।