২০ লাশ দাফনের পর করোনা আক্রান্ত হলেন ইফার কর্মকর্তা

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামানকরোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত ২০টি লাশ দাফনে নেতৃত্ব দেওয়ার পর নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা), মাগুরার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এই অবস্থায়ও তিনি থেমে নেই। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার টিমকে করোনায় মৃতদের লাশ দাফনে উৎসাহ ও নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে দাফন হয়েছে আরও দু’টি লাশ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে যখন কেউ যেতে চাচ্ছিলেন না, তখন লাশ দাফনের দায়িত্ব পান মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দাফন-কাফন টিম। এ টিমের সদস্যরা লাশের গোসল, কাফন পরানো, জানাজা, এমনকি কবর খোড়াসহ সব দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই দলের নেতৃত্বে থাকা মনিরুজ্জামান সব দাফনেই নিজ হাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় জেলায় একনাগাড়ে ২০টি লাশ দাফনের পর জ্বর, ঠান্ডা কাশিসহ শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করলে করোনা টেস্ট করানোর জন্য নমুনা জমা দেন তিনি। গত ২৬ আগস্ট রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ ধরা পরে। বর্তমানে তিনি হোম আইসোলেশনে আছেন।

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে লাশ দাফনে অংশ নেয় তার টিমমনিরুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নির্দেশ ও জেলা প্রশাসনের করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ৬ সদস্যের টিম মাগুরায় করোনায় মৃতদেহ দাফনে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পারিনি। তবে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে করোনাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এ কাজে মাগুরার সংসদ সদস্যসহ সব রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ আমাদের সহায়তা করছেন। বিশেষ করে আমার দলের সদস্যদের সাহসী ভূমিকা কাজটিকে সহজ করে দিয়েছে।’

করোনা আক্রান্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সতর্ক থেকেছি, তবে ভয় পাইনি। আক্রান্ত হতেই পারি, তা মেনে নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবার কাছে আমি দোয়া কামনা করছি, যেন আবার আমি কাজে ফিরতে পারি।’

তার দলের অন্যতম সদস্য মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কর্মসূচির শিক্ষক শহীদুল ইসলাম রেন্টু বলেন, ‘মনিরুজামান আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বটে। তবে লাশের গোসল, জানাজা পড়ানো, দাফন প্রতিটি কাজই তিনি নিজ হাতে করেন। আমরা তার সঙ্গে থাকি। তার নির্দেশমতো কাজ করি। এ রকম সাহসী এবং মানবতাবাদী মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’