বাগেরহাটে গার্মেন্টসকর্মীকে ধর্ষণ, শ্রমিক লীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৫

 

পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃতরা বাগেরহাটে বিজয়া দশমীর রাতে পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ২২ বছর বয়সী এক গার্মেন্টসকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শেখ মিজানুর রহমান (৩৫) বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং বাকপুরা গ্রামের আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে।

গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন-বাগেরহাট সদর উপজেলার চিন্তারখোড় গ্রামের অমল মৃধার ছেলে বিকাশ মৃধা (১৯), নারায়ন চন্দ্র সরকারের ছেলে সুকান্ত সরকার (৩২), অসীম বিশ্বাসের ছেলে বিধান বিশ্বাস (২৮) ও মো. আনোয়ার ফকিরের ছেলে মো. সোহেল ফকির (২৩)।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে সন্ধ্যায় আদালতে পাঠালে বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজ তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ধর্ষণের শিকার ওই গার্মেন্টেস কর্মী নিজে বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকালে বাগেরহাট মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান জানান, সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিকাল থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন মণ্ডপে পূজা দেখে যাত্রাপুর বাজার থেকে রাতে ভ্যানযোগে বাড়ি রওনা দেন ওই গার্মেন্টসকর্মী। রাত ১০টার দিকে বাকপুরা মোড়ে পৌঁছালে ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান-এতো রাতে কোথা থেকে আসছিস বলে তাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে নেয়। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে বাকপুড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নতুন ভবনের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে। রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই তরণীকে চিন্তিরখোড় এলাকায় রেখে চলে যায় মিজান। মেয়েটি একা একা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে। রাত ১২টার দিকে আসামি বিকাশ মৃধা, সুকান্ত সরকার, বিধান বিশ্বাস, মো. সোহেল ফকিরসহ কয়েকজন হদেরহাট বাজারস্থ আবুল হোসেনের বিল্ডিংয়ের পেছনে নিয়ে তার শ্লীলতাহানী ঘটায়।
নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা-মা জানান, এক বছর আগে আর্থিক কষ্টে মেয়েকে গার্মেন্টসে কাজ করতে ঢাকায় পাঠাই। পূজার ছুটিতে মেয়ে বাড়িতে এসেছিল। বন্ধুদের সঙ্গে বিজয়া দশমীর দিন (সোমবার) রাতে পূজা দেখতে যাওয়াই তার কাল হলো। আমাদের মেয়ের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।
জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, মামলা দায়েরের পর আমরা তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানকে এবং শ্লীলতাহানীর অভিযোগে আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবীর পারভেজের আদালতে তোলা হলে তিনি তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।