একবার প্রধানমন্ত্রীকে দেখার স্বপ্ন ঝিনাইদহের সেই অটোচালকের





টাকা দান করছিলেন অটোচালক রাজ কুমারছয় মাস আগের কথা। করোনার কারণে অসহায় হয়ে পড়া মানুষের সাহায্যার্থে জমি কেনার জন্য নিজের তিল তিল করে জমানো ৫০ হাজার টাকা দান করে দিয়েছিলেন ঝিনাইদহের অটোচালক রাজকুমার বিশ্বাস। তখন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের হাতে এই টাকা তুলে দেন রাজকুমার। সে সময় মানবিক এই ঘটনাটি অনেকের মনকে স্পর্শ করে।

ঝিনাইদহের সেই অটোচালক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আবারও ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করেছেন। তবে এবার তিনি তার কষ্টার্জিত জমানো টাকা দিতে চান সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন, এজন্য তিনি বিভিন্ন মহলে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 
৫৫ বছর বয়সী এই অটোচালক অনেক কষ্ট করে টাকাগুলো জমিয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল ঝিনাইদহ শহরে এক টুকরো জমি কিনে বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বাকি জীবন কাটাবেন। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে রাজকুমারের মানসিকতা বদলে যায়। সেই টাকা তিনি অসহায় মানুষের জন্য দান করে দেন। আবারও দান নিয়ে তৈরি তিনি। তবে এবারের ৫০ হাজার টাকা সরাসরি তুলে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।
আবেগাপ্লুত রাজকুমার বলেন, মমতাময়ী মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের কথা চিন্তা না করে দেশের মানুষকে নিয়ে যেভাবে ভাবেন, তাতে তার মনে এই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে দেশের মানুষের কল্যাণে নিজের সামান্য সম্বল দান করেছিলেন। এবারের জমানো টাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিতে চান তিনি। একবার স্বচোখে দেখতে চান তাঁকে। 
রাজকুমারের জন্ম যশোরের পুলিশ লাইনস এলাকার টালিখোলায়। ১৯৯০ সালে জীবিকার তাগিদে ঝিনাইদহে আসেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায় চালিত অটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্তমানে পৌর এলাকার চাকলাপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও একটি শিশুসন্তান নিয়ে তার বাস।






ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, করোনার সময় রাজকুমারের মতো একজন সামান্য অটোচালক যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সমাজের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়েছিল।