ভাড়া না পেয়ে ৫ দিন অবরুদ্ধ, তালাবদ্ধ অবস্থায় শিশুর মৃত্যু!

খুলনা নগরীর হরিণটানা রিয়াবাজার এলাকায় ভাড়া না পেয়ে পাঁচদিন শিশু সন্তানসহ ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শিশুটি খেলার ছলে পানিতে পড়ে গেলে তালাবদ্ধ থাকায় হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়ায় তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। শিশুটির মৃত্যুর পরই বিষয়টি জানাজানি হয়।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) শিশুটির বাবা-মা এ ঘটনায় বাড়িওয়ালা মো. নওশেরকে দায়ী করে থানায় অভিযোগ দেন। কিন্তু পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা গ্রহণ করে। পরে তারা আদালতে মামলা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। মৃত শিশুটির নাম আজিজা তাসমিয়া (৬ মাস)।

মা তামান্না ইসলাম জানান, বাড়িটিতে তালাবদ্ধ অবস্থায় গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে শিশুটি খেলতে গিয়ে বালতির পানির মধ্যে পড়ে উল্টে যায়। ঘরে এসে তিনি শিশুটিকে ওই অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু তালাবদ্ধ থাকায় চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেননি।

ভুক্তভোগী অভিভাবকস্থানীয় জলমা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম লিটন জানান, শিশুটির মা জানালা দিয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে কাঠের ডিজাইন মিস্ত্রি ইমদাদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তামান্না মাসে চার হাজার টাকা চুক্তিতে রিয়াবাজার এলাকায় একতলা বাড়ির দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শুরুতে অগ্রিম ভাড়া দিতে না পারায় ৬ জানুয়ারি থেকে ঘরে শিশু সন্তানসহ তামান্নাকে তালাবদ্ধ করে রাখেন বাড়িওয়ালা নওশের। এ সময় তামান্নার স্বামী মোংলার ঝিউধরা এলাকায় কাঠের কাজে গিয়েছিলেন।

লবণচোরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমীর কুমার সরদার জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিক তদন্তে মায়ের অসাবধানতায় শিশুটি মারা গেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। গৃহকর্ত্রী শিশুটিকে গোসল করানোর সময় ফোন এলে তিনি কথা বলার জন্য সে অবস্থায় শিশুকে রেখে ছাদে যান। এদিকে শিশুটি পাত্রের পানিতে পড়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে শিশুটি মারা যায়। তাই এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, অসহায় বাবা-মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হবে।