এবার গরুরও জীবন বিমা

সাতক্ষীরায় দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত খামারিদের বিনিয়োগ সুরক্ষায় গরুর জীবন বিমা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাণ ডেইরি লিমিটেড এবং ফিনিক্স ইনস্যুরেন্সের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো এ গরুর বিমা কার্যক্রম শুরু হয়।

এটি বাস্তবায়নে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রের আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা এসিডিআই/ভোকা। সংস্থাটির অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির নাম, ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ লাইভস্টক প্রডাকশন ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন। প্রাথমিকভাবে কার্যক্রমটি সাতক্ষীরায় পরিচালনা করা হচ্ছে। পরে খুলনায় চালু হবে। খামারিদের বিনিয়োগ সুরক্ষার চিন্তা মাথায় রেখে এ কার্যক্রম শুরু করায় উদ্যোক্তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলা এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।

এসিডিআই ও ভোকার মাঠ সমন্বয়কারী ডা. মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হক বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম সাতক্ষীরাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত খামারিদের গরুর বিনিয়োগ সুরক্ষায় গরুর জীবন বীমা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিমা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা সদর, ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর; তালা উপজেলার খলিষখালী, ইসলামীকাটি ও খলিলনগর ইউনিয়নে এ কার্যক্রম চলেছে।

তিনি আরও বলেন, গরুর দাম এক লাখ টাকা হলে সেই গরুর জন্য তিন হাজার ৪৫০ টাকায় বিমা করা কথা থাকলেও তিনটি সংস্থার পক্ষ থেকে ৮০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ৬৯০ টাকায় বিমা খুলে ৩৩৯ জন খামারি সহায়তা পেয়েছেন। আমাদের পাইলট প্রজেক্ট শেষ হয়েছে। খুব দ্রুত দ্বিতীয় ফেজে কার্যক্রম শুরু হবে।

জানা যায়, ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৩৩৯ জন খামারি তাদের গরুর আকস্মিক মৃত্যুতে ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে এই গরু বিমার আওতায় আসেন। খুরা রোগসহ বিভিন্ন কারণে গরুর আকস্মিক মৃত্যু হলে, ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড বিমাকারী গরুর আর্থিক দায়ভার বহন করবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে গরুর ৯০ শতাংশ মূল্য খামারিকে পরিশোধ করবে।

সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের গাভা গ্রামের খামারি প্রভাস সরদার বলেন, আমার তিনটি গরুর জীবন বিমা করেছি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের আওতায় কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়া হয়েছে। গরুর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। ক্ষুরা রোগসহ বিভিন্ন কারণে গরুর মৃত্যু হলে ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানি আর্থিক সহায়তা দেবে। সেজন্য জীবন বিমা করেছি।

প্রাণ ডেইরি এবং ফিনিক্স ইনস্যুরেন্সের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই বিমা সেবা শুধু সাতক্ষীরা বা খুলনায় সীমাবদ্ধ না থেকে ভবিষ্যতে দেশের গরু লালন-পালনকারী প্রত্যেক খামারির দোরগোড়ায় সহজে পৌঁছে যাবে এবং দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত সব ধরনের খামারিরা এই সেবাটি গ্রহণ করবেন।