করোনায় মারা গেছেন বাদল, জানে না স্ত্রী-সন্তান

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের সোনার অলঙ্কার ব্যবসায়ী বাদল কর্মকার (৪০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ২৯ জুন। ওই দিন বরিশাল মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এরপর ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও তার স্ত্রী সীমা কর্মকার (২৭) জানেন না স্বামীর মৃত্যুর খবর। তিনি অপেক্ষায় আছেন স্বামী সুস্থ হলেই বাড়ি চলে আসবেন। আর একমাত্র সন্তান সূর্য (১১) অপেক্ষায় রয়েছে বাবা কবে ফিরে আসবে।

তবে তাদের আশা যে আর পূরণ হওয়ার নয় সেই খবর জানাতে আসবেন বাদলের স্ত্রীর ভাইয়েরা। কিন্তু কীভাবে এ খবর জানাবেন আর তাদের সামলে নিবেন এজন্য প্রতিবেশীরা রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।

স্থানীয়রা জানান, জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাদল কর্মকারের পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হন। কিন্তু সামান্য সর্দি, কাশি ও জ্বরকে তারা গুরুত্ব দেননি। এরমধ্যে বেশ কিছুদিন পার হলে বাদলের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। অসুস্থ বেশি হলে তারা সবাই গত ২৪ জুন শরণখোলা উপজেলা হাসপাকালে করোনা পরীক্ষা করান। তবে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে নমুনা পরীক্ষায় বাদলের নেগেটিভ এবং তার স্ত্রী সন্তানের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বাসায় বাদলের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। খবর পেয়ে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন একদিন পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তাকে। সেখানে করোনা পরীক্ষায় তার পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ততক্ষণে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। একপর্যায়ে ওই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ জুন বাদলের মৃত্যু হয়। ওই দিনই তাকে বরিশাল মহাশ্মশানে সৎকার করা হয়।

বাদলের শ্যালক উজ্জল কর্মকার মোবাইলফোনে বলেন, বোন সীমা কর্মকার ও ভাগ্নে সূর্য কর্মকারের করোনা পজিটিভ থাকার কারণে তাদের এখনও বাদলের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। সোমবার সকালে তাদের পুনরায় করোনা পরীক্ষার নমুনা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে জানানো হবে বাদলের মৃত্যুর খবর।

শরণখোলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াসমিন জানান, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট প্রায় ৬০ ভাগ সঠিক পাওয়া যায়। এ কারণে বাদল কর্মকারের রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি। পরের টেস্টে পজিটিভ আসে।