চামড়া নিয়ে খুলনায় হতাশা

খুলনায় কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে বাজারে চামড়া এনে দাম শুনে অবাক হচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। এক লাখ টাকা মূল্যের গরুর চামড়ার দাম ৩০০ টাকাও উঠছে না। চামড়ায় কাটা-ছেঁড়া আছে- এমন অজুহাতে বাদের তালিকায় ফেলে দাম কমিয়ে দিচ্ছেন পাইকাররা। এ নিয়ে পাইকারদের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতাদের বাগবিতণ্ডাও হচ্ছে। এ অবস্থায় খুলনায় চামড়া ১০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে কেনা-বেচা হতে দেখা গেছে।

নিজের কোরবানির গরুর চামড়া বিক্রি করতে আসা আবু ওসমান জোবায়ের বলেন, ‘৬৫ হাজার ও ৯০ হাজার টাকায় দুইটি গরু কোরবানি দিয়েছি। আশা ছিল, দুইটি চামড়া কমপক্ষে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু বাজারে আনার পর ৩০০-৪০০ টাকা দাম বলছে। তিন বছর আগেও এ রকম দুইটি চামড়া ২২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু এ বছর তো সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে পাইকাররা সরকারি দরের ধারে কাছে যাচ্ছেন না।’

মাদ্রাসার জন্য চামড়া সংগ্রহকারী মোতালেব মিয়া বলেন, ‘এবার দুইটি চামড়া পাওয়া গেছে। কিন্তু চামড়ার দাম নেই। মাদ্রাসা থেকে বাজার পর্যন্ত আসতে ২০০ টাকা ব্যয় হয়। আর দুইটি চামড়ার দাম ৬০০ টাকা বলছে।’

খুলনার শেখপাড়া চামড়া পট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, ৫-৬ জন পাইকারি ব্যবসায়ী রাস্তার ওপর টুল নিয়ে বসে চামড়া কিনছেন। তারা সড়কেই ধুলা-ময়লার মধ্যে চামড়া জমাচ্ছেন। মো. আবু জাফর নামের এক পাইকার বলেন, ‘ট্যানারিতে গড়ে চামড়া প্রতি ৫০০ টাকা হিসেব করে। আমরা সেখানে ৬০০ টাকায়ও চামড়া কিনছি। চামড়া প্রতি লেবার, লবণসহ অন্যান্য সবমিলিয়ে আরও ২০০/৩০০ টাকা ব্যয় আছে।’

মো. শহিদুল ইসলাম নামের আরেক পাইকার বলেন, ‘কসাইদের চামড়া ভালো থাকে। সেগুলোর দামও বেশি দেওয়া হচ্ছে। ৭০০/৮০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের চামড়ায় অসংখ্য কাটা থাকে। ফলে ওই চামড়া কোনও কাজে আসে না। তাই কিনতেও চাই না। বাধ্য হয়ে ২০০/১০০ টাকায় কিনি। কারণ ওরাতো চামড়াটি নষ্ট করে ফেলবে। চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য ন্যূনতম দাম দেই।’