কোরবানিতে সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত চট্টগ্রামের আড়তদাররা। ঢাকার ট্যানারি ও চট্টগ্রামের একমাত্র ট্যানারির কাছে এসব লবণজাত চামড়া বিক্রি করা হবে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের আড়তদারগণ ঢাকার কিছু ট্যানারির কাছে চামড়া বিক্রি শুরু করেছে। শনিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার চামড়া বিক্রি করা হয়েছে। বাকি চামড়া বিক্রি হবে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে।
তবে সরকার নির্ধারিত দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ আড়তদারদের। সরকার যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা করে নির্ধারণ করেছে বর্তমানে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা করে।
এবার চট্টগ্রামের আড়তদাররা চামড়া সংগ্রহ করেছেন চার লাখ ১৫ হাজার ৩৫১টি। এর মধ্যে গরুর চামড়া তিন লাখ ১৫ হাজার ৩৫১টি। মহিষের চামড়া ১০ হাজার ৫০০টি। ছাগলের চামড়া ৫২ হাজার ৫০০টি।
যদিও চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে এবার ৭ লাখ ৮১ হাজার ৮৩১টি প্রাণী কোরবানি দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ছিল গরু-মহিষ ৫ লাখ ২৪ হাজার ৪৯০টি, ছাগল ও ভেড়া ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৫টি। বাকি চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ী, মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংগ্রহ করেছে।
চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো, মুরাদপুর, বিবিরহাট, হামজারবাগের কাঁচা চামড়ার আড়তগুলো ক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বেশ কয়েকজন ট্যানারি মালিক চট্টগ্রাম এসে চামড়া ক্রয় করেছেন বলে জানিয়েছেন এসব এলাকার আড়তদাররা। ঢাকার আরএসএম লেদার শুক্রবার (১৩ জুন) ১৫ হাজার চামড়া কিনেছে। এসব চামড়া ট্রাকে তুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকায় নেয়ার জন্য। ঢাকার আরও একজন বড় ক্রেতা খোকন ট্যানারি ও পান্না লেদারেরের কর্মকর্তারাও এসেছেন চট্টগ্রামে। তারা প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০ হাজার চামড়া নেন। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো আসছে চামড়া কিনতে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার চার লাখ ১৫ হাজার ৩৫১টি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩০০টি এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫১টি চামড়া সংগ্রহের পর সংরক্ষণ করা হয়েছে। চামড়াগুলোর মধ্যে আছে- ৩ লাখ ৫২ হাজার ৩৫১টি গরুর, ১০ হাজার ৫০০টি মহিষের এবং ৫২ হাজার ৫০০টি ছাগলের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আড়াতদারদের কেনা এসব চামড়া বিক্রি শুরু হয়েছে। ঢাকার ট্যানারি ও চট্টগ্রামের একমাত্র রিফ লেদার ট্যানারির কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম দিচ্ছেন না ট্যানারি মালিকদের কেউ। সরকার যেখানে প্রতি বর্গফুট চামড়া ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা করে নির্ধারণ করেছে বর্তমানে প্রতি বর্গফুট চামড়া বিক্রি করা হচ্ছে মাত্র ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা করে। ট্যানারি মালিকরা এরচেয়ে বেশি দাম দিচ্ছেন না। কোরবানি পশুর চামড়া সাধারণত ২০ থেকে ২২ বর্গফুট হয়ে থাকে।’
চট্টগ্রামের একমাত্র ট্যানারি রিফ লেদারের পরিচালক মোখলেছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রতি কোরবানিতে এক লাখের মতো লবণজাত চামড়া কিনে থাকি। এবারও একই পরিমাণ চামড়া আমরা কিনবো। ইতোমধ্যে আড়তদারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি।’