বাগেরহাটে পানিবন্দি হাজারো পরিবার, টর্নেডোতে বিধ্বস্ত বাড়িঘর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

বুধবার (২৮ জুলাই) সারাদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল। বৃষ্টির পাশাপাশি রামপালে টর্নেডোর আঘাতে ২০টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শরণখোলা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া সদর, রামপাল, মোংলা, চিতলমারীসহ অন্য আট উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের কৃষক শেখ আমজাদ আলী বলেন, বৃষ্টি এভাবে অব্যাহত থাকলে মাছের ঘের তলিয়ে যাবে। সবজি ফসলের ক্ষতি হবে। মাছ চাষিদেরও ক্ষতি হবে।

খানপুর ইউনিয়নের চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, গত দুই দিনে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ঘেরের পাড়ের সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

কচুয়া উপজেলার লিটন শেখ বলেন, টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে আমাদের এলাকার বেশ কিছু মাছের পুকুর, ঘের, কৃষিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বহু পরিবার।

চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া বিলের মাছ চাষি জাহিদুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পানিতে আমাদের ঘের ও বাড়িঘর তলিয়ে যায়। অনেক টাকার মাছ ভেসে গেছে সেসময়। এখন যদি আবার ঘের তলিয়ে যায়, তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার

রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কবীর হোসেন বলেন, উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের মিরাখালি গ্রামের উওর দিয়ে টর্নেডো বয়ে গেছে। এতে ২০টি কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, প্রচণ্ড ঝড়ে প্রায় ৪০টির অধিক গাছপালা উপড়ে গেছে। টিনের চাল উড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০টির অধিক ঘরবাড়ি। বেশ কিছু গবাদি পশু ও হাস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিতে আউশ-আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে শরণখোলা উপজেলায়। এছাড়া জেলায় গড়ে ৯৩ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদি এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে তাহলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।