চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের ‘লাইফলাইন’ খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ে অংশেও জলমগ্ন হয়ে গেছে। মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী অংশের সোনাপাহাড় এলাকায় প্রায় ৩০০ মিটার বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভোর থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পানিতে ডুবে ছিল। টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কের মীরসরাইয়ের ২৯ কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় চট্টগ্রামমুখী অংশের পাশ দিয়ে গ্যাসলাইনের পাইপ স্থাপন শেষে বিভিন্ন অংশে মাটির স্তূপ থাকা এবং সওজের জায়গা দখল করে আরশিনগর ফিউচার পার্ক স্থাপনের ফলে পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে ভারী বর্ষণ হলেই মহাসড়কের ওই অংশে পানি জমে যায়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে মহাসড়কে প্রায় দেড় ফুট পানি জমে যায়। গত বছরও মহাসড়কের এই অংশ পানিতে ডুবে গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত মহাসড়কে পানি জমে ছিল। এ ছাড়া টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে সৃষ্ট হওয়া গর্তে ইট বসানো হলেও তা গাড়ির চাকায় মুহূর্তে পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মহাসড়কে জলমগ্ন হওয়া ও সৃষ্ট গর্তে গাড়ি চলাচল করছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।
বারইয়ারহাট থেকে মীরসরাই আসা এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় পানি জমে যাওয়া ও সৃষ্ট গর্তে গাড়ি চলাচল ছিল অত্যন্ত ধীরগতির। এতে করে মহাসড়কে জ্যাম সৃষ্টি হয়।’
স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমিতে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। টানা চার দিনের ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানি যেতে না পারায় মহাসড়কে পানি উঠে গেছে।’
চট্টগ্রামমুখী চয়েস পরিবহন সার্ভিসের কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘বারইয়ারহাট থেকে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। সোনাপাহাড় এলাকায় ডুবে থাকা সড়ক পাড়ি দিয়ে মীরসরাই পৌঁছাতে ২০ মিনিটের পথ আসতে সময় লেগেছে প্রায় ১ ঘণ্টা।’
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সোনাপাহাড় এলাকায় সড়কে পানি ওঠায় যানবাহনগুলো একটু ধীরগতিতে চলছে। পানি নেমে যাওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
সড়ক ও জনপথ (সওজ) চট্টগ্রামের সড়ক উপবিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান বলেন, ‘সোনাপাহাড় অংশে মহাসড়কে জমে যাওয়া পানি অপসারণ ও পানি চলাচলের পথ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মহাসড়কের সৃষ্ট গর্তে ইট বসানো হয়েছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে স্থায়ীভাবে কাজ করা হবে।’