বাগেরহাটে ভেসে গেছে ১১ কোটি টাকার মাছ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও জোয়ারের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার ৫০ হাজরের বেশি পরিবার। ভেসে গেছে ১৭ হাজার ঘের ও পুকুরের মাছ। এতে চাষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। শুক্রবার (৩০ জুলাই) জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে গত বুধবার রাতের ঝড়ো হাওয়ায়কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। কাঁচা-পাকা সড়কও ডুবে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শরণখোলা উপজেলায় সর্বোচ্চ ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৮৬ দশমিক ২২ মিলিমিটার।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার খানজাহান পল্লী গোবরদিয়া, কাড়াপাড়া, খানপুর, নাগেরবাজার, সাহাপাড়া, হাড়িখালি-মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বাগেরহাট শহরের বেশ কয়েটি সড়কের উপর এক থেকে দেড় ফুট পানি দেখা যায়। উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতেই এই অবস্থা বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

তিন দিনের বৃষ্টিতে মাছ চাষিদের ১১ কোটি টাকার ক্ষতি

অন্যদিকে শরণখোলার খুড়িয়াখালী, সাউথখালী, কচুয়ার নরেন্দ্রপুর, চন্দ্রপাড়া, রাড়িপাড়া, পদ্মনগর, ভান্ডারকোলা, মোরেলগঞ্জ পৌরসভা এলাকা, শানকিভাঙা ও চিংড়াখালীসহ আরও অনেক এলাকা এখন পানিতে নিমজ্জিত। এসব এলাকার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। রান্না-খাওয়াও বন্ধ। এছাড়া ভেসে যাওয়া ঘেরের মাছ বাঁচাতে বৃষ্টিতে ভিজেই শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন মাছ চাষিরা।

বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি এলাকার সাইদুল মীর বলেন, বৃষ্টিতে ঘেরের পাড় ও ভিটায় সব জায়গায় পানি উঠে গেছে। শসা, ঢেঁড়স, পেঁপে ও লাউসহ সব ধরনের গাছ পানিতে ডুবে গেছে। এভাবে দুই-একদিন থাকলে গাছগুলো যাবে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রোদ উঠলেই এসব গাছ মরে যাবে। এই বৃষ্টিতে খুব ক্ষতি হয়ে গেলো।’

রামপাল উপজেলার পেরিখালি এলাকার মোতাহার হোসেন বলেন, ‘দুই দিনের বৃষ্টিতে এলাকার মানুষের ঘের-পুকুর সব তলিয়ে গেছে। নেট ও মাটি দিয়েও রাখা যায়নি। বন্যাতেও এত পানি দেখা যায় না।’

শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আম্পান ঘূর্ণিঝড়কে হার মানিয়েছে এই বৃষ্টি। এত বেশি মানুষকে একসঙ্গে কখনও পানিবন্দি দেখিনি।’

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, টানা বর্ষণে বাগেরহাটে ১৭ হাজারের অধিক মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকার। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি।