হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে বললেন, এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে

বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী অববাহিকার ৪৭ গ্রামের আট হাজার পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ গত তিন মাস ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় আটকে আছেন। প্রায় তিন দশক ধরে এই অঞ্চলের ২০ লাখ মানুষ একই সমস্যায় ভুগছেন- এমনটি উল্লেখ করে বেতনা তীরের বিস্তীর্ণ জলাবদ্ধ জমিতে দাঁড়িয়ে বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মানববন্ধনে তারা বলেন, আমাদের এলাকায় কর্ম না থাকায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। নারীরা সংসারের দায়ভার নিয়ে অচল অবস্থায় পড়েছেন। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, পানি অপসারণের কোনও পথ নেই। ফসল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট মাছের ঘেরগুলোও তলিয়ে গেছে। গবাদিপশু, হাঁসমুরগি পালনও বন্ধ হয়ে গেছে। বেতনা নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে পড়ায় এ বছর প্রয়োজনের তুলনায় ৭০০ মিলিমিটার গড় বৃষ্টিপাত কম হলেও জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িঘর ধসে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সুপেয় পানির অভাবে নানা ধরনের রোগের সঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছে চর্মরোগে। এই দুরবস্থা থেকে আমাদের রক্ষা করুন।

satkshira2

সাতক্ষীরার বেসরকারি সংস্থা ‘উত্তরণ’ পরিচালিত পানি কমিটির সদর উপজেলার সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, মনিরামপুরের অ্যাড. কামরুজ্জামান, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, কুলোটি ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র, পায়রা ইউপি চেয়ারম্যান বিষ্ণুপদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর জাকির হোসেন, পাইকগাছার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল রাজ্জাক মৌলঙ্গি, সেলিম আক্তার স্বপন, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী প্রমুখ।

মানববন্ধন শেষে বেড়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তারা বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এ অঞ্চলের মানুষের হাতে নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা দরকার। একইসঙ্গে সেচ পাম্প বসিয়ে পানি অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসাবে বেতনা ও মরিচ্চাপ খনন করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু।