রূপসার শিয়ালীর মন্দিরে হামলা মামলায় ২৩ আসামি জেলে

রূপসা উপজেলার শিয়ালীতে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জন জেল হাজতে রয়েছেন। অন্যদিকে জামিনে রয়েছেন আরও ১০ জন। এদিকে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো সংস্কার শেষে পূজার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় বিশৃঙ্খলা রোধে স্থানীয় টহল ফাঁড়িতে বাড়ানো হয়েছে জনবল। 

এদিকে ২০১৮ সালের অক্টোবরে খুলনা ক্রিসেন্ট জুট মিল মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর মামলায় কোনও আসামি আটক না হওয়ায় শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে বাদী এক বছরের মাথায় মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। 

রূপসা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল সেন বলেন, গত ৭ আগস্টের ওই ঘটনার পর বর্তমানে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মন্দিরে পূজা অর্চনা ও মসজিদে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানও চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির মেরামত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। এখনও কিছু ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। 

এদিকে রূপসা থানার পরিদর্শক ও এই মামলা তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলায় এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১০ জন জামিনে রয়েছেন। অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি। 

রূপসা থানার ওসি সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওই হামলার ঘটনায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে, এলাকায় পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে। ফলে শিয়ালী এলাকায় এখন স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ৭ আগস্ট সন্ধ্যার আগে শিয়ালী মহাশ্মশান মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা সেখানকার  প্রতিমা এবং শ্মশানের যাবতীয় উপকরণ ভাঙচুর করে। এরপর তারা শিয়ালী পূর্বপাড়া এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শিয়ালী পূর্বপাড়ার হরি মন্দির, শিয়ালী পূর্বপাড়া দূর্গা মন্দির এবং শিবপদ ধরের গোবিন্দ মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। এ সময় কয়েকজনের বাড়ি ও দোকানে হামলা এবং ভাঙচুর চালানো হয়।  এর আগে গত ৬ আগস্ট রাতে শিয়ালী গ্রামের কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা নামকীর্ত্তণ করতে করতে শিয়ালী শ্মশান মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। শিয়ালী জামে মসজিদে এশার নামাজ চলাকালে তারা ওই এলাকায় পৌঁছান। এ অবস্থায় ইমাম বের হয়ে তাদের বাদ্যযন্ত্র বন্ধ করতে বলেন। এ ঘটনাকে ঘিরে মসজিদের মুসল্লি ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটে। 

এদিকে ক্রিসেন্ট জুট মিল মন্দির কমিটির তৎকালীন সভাপতি বসন্ত কুমার গঙ্গা বলেন, এক বছরেও মন্দিরে হামলার ঘটনায় কোনও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। এ মামলার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তাম। তাই সবার স্বস্তি ও শান্তি বজায় রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, মহানগরীর খালিশপুরে ক্রিসেন্ট জুট মিলের মন্দিরের ২০১৮ সালের ৫ অক্টোরর রাতে প্রতিমা ভাঙচুর হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ একজনকে আটক করে। পরে তকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মন্দির কমিটির তৎকালীন সভাপতি বসন্ত কুমার গঙ্গা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এক বছরেও এ মামলায় কোনও আসামি গ্রেফতার হয়নি।