আগের নির্বাচনে দুই, এবার পেলেন ৩ ভোট

এর আগেও দুইবার ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন জালাল উদ্দিন। তবে দমে যাননি। এবারও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন তিনি। আগের দুইবারের মতোই হয়েছে ভরাডুবি। পেয়েছেন মাত্র তিন ভোট। তৃতীয় ধাপে রবিবার (২৮ নভেম্বর) এ ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ হয়েছে।

এরপরও কষ্ট নেই জামালের। বরং তিনি বলছেন, ‘সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে জনগণ তাকেই একসময় বেছে নেবেন’। প্রথমে ২০১১ সালে ওই ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করেছিলেন তিনি। সেবার পেয়েছিলেন মাত্র ১৩৩ ভোট। এরপর ২০১৬ সালে সদস্য পদে পেয়েছিলেন দুই ভোট। এবার তার একজন ভোটার বেড়ে হয়েছে তিন ভোট।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোট চার জন সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে হুমায়ন কবির ফুটবল প্রতীকে ৬৬০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। জাহাঙ্গীর আলম মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪১০ ভোট। আরেক প্রার্থী আব্বাস আলী কোনও ভোটই পাননি।

এক প্রার্থী শূন্য ভোট পাওয়ায় এই ওয়ার্ডে সদস্য পদের ভোটের ফলাফল নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের প্রশ্ন- ওই প্রার্থীর নিজের ভোট গেলো কই? আর জালাল উদ্দিন পেয়েছেন মাত্র তিন ভোট, তাহলে তার পরিবারের ভোট গেলো কই?

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা মিশন আলী বলেন, ‘নির্বাচন সব জায়গাতেই হয়। ১ নম্বর ওয়ার্ডের জালাল উদ্দিন প্রতি নির্বাচনেই অংশ নেন। কখনও চেয়ারম্যান পদে আবার কখনও সদস্য পদে। এ ওয়ার্ডে আরেকটি মজার ঘটনা ঘটেছে, মেম্বর পদের প্রার্থী আব্বাস আলী শূন্য ভোট পেয়েছেন। তাহলে ওই প্রার্থীর নিজের ও তার পরিবারের ভোটটা গেলো কোথায়? এ নিয়ে এলাকায় হাস্যরস সৃষ্টি হয়েছে।’

ওই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু জানান, জালাল উদ্দীন নির্বাচনে আগ্রহী মজার মানুষ। নিজের প্রচার নিজেই করেন। নিজের রিকশায় প্রচার মাইক বেঁধে নিজে চালিয়ে নিয়ে বেড়ান। নিজের পোস্টার নিজেই বিলি করেন। এটাও নির্বাচনের একটি অংশ।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, নির্বাচনি হলফনামায় জামাল উদ্দিন উল্লেখ করেছেন, তিনি ১৯৮৭ সালে এসএসসি পাস করেছেন। তার বাড়ি সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাদিরকোল গ্রামে। তার বাবার নাম আরশেদ আলী, সংসারে স্ত্রী, চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। আগে রিকশা চালাতেন। এখন কবিরাজি করেন। প্রতি নির্বাচনে তিনি আগ্রহের সঙ্গে অংশ নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে ভোটভিক্ষা করেন। এবার তিনি মোট তিন ভোট পেয়েছেন। এর আগের নির্বাচনে পেয়েছিলেন দুই ভোট। তারপরও তিনি আগ্রহ হারাননি।