ধর্ষণচেষ্টার বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় সালিশ বৈঠকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার না পেয়ে এক গৃহবধূ (৪২) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

সোমবার (৭ মার্চ) বিকালে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের ঋষীপল্লীতে এই ঘটনায় ঘটে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত ৫ মার্চ বিকালে ওই নারীকে একই গ্রামের কপিল ফকিরের ছেলে মিজানুর রহমান ফকির ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে মিজানুর পালিয়ে যায়। পরদিন এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে যাওয়ার সময় ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও অভিযুক্ত মিজানুরের চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম মোস্তফা বিষয়টি গোপন রাখতে ও মামলা না করার জন্য চাপ দেন। তারা গৃহবধূর পরিবারকে আশ্বস্ত করেন, এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার করা হবে।

ওইদিন সন্ধ্যার পর সালিশ বৈঠকে অভিযুক্ত মিজানুর ছিল না। এ সময় দুই মেম্বার ও আবুল সরদার দফতরিসহ কয়েকজন ওই গৃহবধূকে তিরস্কার করেন। বিচারকরা ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করায় অভিমানে সোমবার বিকালে ওই গৃহবধূ বিষপান করে আত্মহত্যা করে বরে পরিবারের অভিযোগ। 

মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টু বলেন, শুনেছি, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে চার সন্তানের জননী ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা করে এক মেম্বারের চাচাতো ভাই। ভুক্তভোগীর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়ভাবে সালিশে ওই নারীকে তিরস্কার করা হয় বলে শুনেছি। বিচার না পেয়ে অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, আজ সকালে লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত করতে এসআই আতিকুজ্জামানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তদন্তের একপর্যায়ে ধর্ষণ চেষ্টা ও সালিশের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর অভিযান চালিয়ে দুপুরের পর ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও আবুল হোসেন দফতরিকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় আটক দুই জনসহ মূল অভিযুক্ত মিজানুর ও ইউপি মেম্বার মোস্তফা গাজীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূর স্বামী।